ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

দু’টি কিশোর-কবিতা | চন্দনকৃষ্ণ পাল

কিশোর-কবিতা / ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৪
দু’টি কিশোর-কবিতা | চন্দনকৃষ্ণ পাল

বালকবেলার দোয়েল শ্যামা

বালকবেলার দোয়েল এবং শ্যামার কথা মনে পড়ে
আজকে সে সব প্রিয় পাখি জানি না তো কোথায় আছে,
গ্রামের পথে হাঁটি যখন হাওয়ায় গাছের পাতা নড়ে
হয়তো বা ঐ পাতার ফাঁকে লেজ দুলিয়ে ওরাই নাচে।

বালকবেলার সেই পাখিদের কেমন করে এখন চিনি
বদলে গেছি আমিও তো বদলে গেছে গ্রামের হাওয়া,
আজ বাজে না সোনামণির পায়ের নুপূর রিনিঝিনি
হারিয়ে গেছে বালকবেলা যায় না তারে খুঁজে পাওয়া।



বালকবেলার দোয়েল শ্যামা ডাকে কি আর মিষ্টি শীষে?
তাল-তমালের ছায়া তো নেই গ্রাম সেজেছে আধা শহর,
যন্ত্রযানের বিদঘুটে সুর পাখ-পাখালি হারায় দিশে
হিন্দি গানের মাতাল সুরে সবাই মাতাল অষ্টপ্রহর।

বালকবেলার সেই পাখিরা সুর হারিয়ে পাগলপারা,
বুকের ভেতর কান্না জমে মন হয়ে যায় সর্বহারা।


আমার কথা, নদীর কথা

এই যে দেখো জলের খেলা দূরে,
গাইছে নদী জলের সুরে সুরে।

তিন পুরুষের ভিটে মাটি, সুখ দুঃখের সাথে
জড়িয়ে ছিলো অযুত দিন ও রাতে
সূর্য ওঠা সূর্য নামা
বৃষ্টি নামা বৃষ্টি থামা
রংধনুটার রং ছড়ানো আভায়
হাসি আর গানে গানে জীবন চলে যায়
ষড়ঋতু রাঙায় জীবন
বড় হবার আমার যে পণ
মাথায় নিয়ে এগিয়ে যাবার পালা
অভিবাদন জানিয়ে সবাই গলায় পরায় মালা
সুখ এসেছে হাসি নিয়ে
রাখাল ছেলের বাঁশি নিয়ে
দুঃখ এলে মেঘলা আকাশ
গাছের পাতায় দুখি বাতাস
এসব নিয়েই জীবন যাপন চলে
সূর্য ডোবার পালা এলে আলোর প্রদীপ জ্বলে
আলো আঁধার নিয়ে জীবন ঠিক
আঁধার গেলে হাসবে আলো ফিক
এটাই হবার কথা ছিলো বুঝি
কিন্তু আজ দুচোখ মেলে খুঁজি
তিন পুরুষের ভিটে কোথায়?
কোথায় আমার মান?
ভিটে গেছে, নিয়ে গেছে আমার মন ও প্রাণ
শূন্য আমি শুনি নদীর সুর
চোখেতে আর জল আসে না, দুচোখে রোদ্দুর।

খাঁ খাঁ রোদে পুড়ে আমার বুক,
নদীর জলে হারিয়ে গেছে আমার সকল সুখ।



বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।