ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৫৬)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৫৬) রহস্য দ্বীপ

ওটাকে ঠিকই মনে হয়। পুঁচকে মেয়েটির তা খুব একটা খুঁটিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে না, কারণ সে পাহাড়ের কাছে গিয়ে দেখে আসতে চাইছে আর কোনো বুনো-রাজবেরি পেকেছে কিনা। যেমনটা উচিত ছিল, সেভাবে সতর্ক চোখ রাখলে সে বেড়ার মাঝে বড় একটা ফুটোই দেখতে পেতো, একটা মুরগি ঠুকরে সেখানকার ফার্ন আর গুল্ম সরিয়ে ফেলেছে। কিন্তু সে তা দেখতে পায়নি। সে ডাল দিয়ে পেগির বানানো একটা ঝুড়ি তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। 

তুমি কি রাজবেরি খুঁজতে যাচ্ছ নোরা? পেগি ডাকে।  
হুম! নোরা চিৎকার করে।


ভালো, যতটা পারা যায় নিয়ে এসো, তাহলে রাতে মাখনের পুডিং বানাবো! পেগি চেঁচিয়ে বলে। একাই সবগুলো খেয়ে ফেলো না!
আমার সঙ্গে এসে সাহায্য করো!” সবার জন্য রাজবেরি পাড়তে হবে, কথাটা ভেবে খুব একটা খুশি না হওয়ায় সে খেঁকিয়ে ওঠে।
আমাকে পানি আনতে ঝরনায় যেতে হবে, জবাবে পেগি বলে; এবং তারপর সেলাই করতে হবে।
তাই নোরা একাই যায়। সে রাজবেরির একটা ঝোপ দেখতে পায়, গতকাল এটা তার চোখে পড়েনি এবং ওখানে প্রচুর পাকা রাজবেরি রয়েছে। পুঁচকে মেয়েটা টপাটপ গোটা দশেক রাজবেরি খায় তারপর রসালো মিষ্টি ফল দিয়ে ঝুড়ি ভরতে শুরু করে। জ্যাক ডেইজিকে দ্বীপের অন্যপাশের মাঠে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় নোরা তাদের শব্দ শুনতে পায়। ঝোপের ভেতর উইলো ডাল কাটার সময় মাইকের শিসও শোনে, মাইক সবার চাহিদা মতো কাজে লাগাবার জন্য সেগুলো তৈরি করছে। সবাই খুব ব্যস্ত আর সুখী।
নোরা পাহাড় থেকে বেরিয়ে থাকা তপ্ত একটা পাথরে হেলান দিয়ে খোলা রোদে এসে বসে। সত্যিই খুব ভালো লাগছে। হ্রদটা তার নিচের ফরগেট-মি-নট ফুলের মতোই নীলচে। মাইক ডাকার আগপর্যন্ত নোরা রোদে অলসভাবে সেখানেই বসে থাকে: 
নোরা! নোরা! তুমি কোথায়! অনেকক্ষণ তোমাকে দেখছি না!
এই তো আসছি! নোরা চেঁচায় এবং পাহাড়ের কিনারা ঘেঁষে রাজবেরি ডাল, ফার্ন আর গুল্মের মাঝ দিয়ে পথ করে সৈকতের দিকে নেমে আসে, যেখানে এখন বাকিরা সবাই রয়েছে। পেগি আগুন ধরিয়ে জ্যাকের আনা খরগোশ রান্না করছে।  
রাজবেরিগুলো কোথায়? জ্যাক জিজ্ঞেস করে। ওহ্, ঝুড়িভর্তি পেয়েছ! সুন্দর! যাও ওখানে বোলের দুধ থেকে মাখন তোলো, নোরা, তারপর জগে করে নিয়ে এসো। আমাদের সবাই বেশি বেশি করে খেতে পারবো।
শিগগিরই ওরা খাবার খেতে শুরু করে। পেগির রান্নার হাত খুব ভালো। তবে রসালো মিষ্টি রাজবেরির ওপর ঢেলে দেওয়া পুরু হলদে মাখন সবচেয়ে স্বাদের। বাচ্চার চেটেপুটে খুব মজা করে খায়!
মুরগিগুলোকে আজ চুপচাপ মনে হচ্ছে, মাখন শেষ করে, জ্যাক বলে। খাবার খেতে বসার পর থেকে একবারও কক্ কক্ শুনিনি!
আমার মনে হয় ওরা ঠিকই আছে? পেগি বলে।
যাই আমি গিয়ে দেখে আসি, মাইক বলে। সে তার বাসনটা নামিয়ে রেখে মুরগির উঠানের দিকে যায়। সে এদিক তাকায়-ওদিক তাকায়- বস্তা উচিয়ে কোনার দিকে চালার নিচে খুঁজে- কিন্তু কোথাও কোন মুরগি দেখতে পায় না!
ওরা ঠিক আছে তো? জ্যাক বলে।  
মাইক হতাশ চোখে তাকায়। না! সে বলে। ওরা এখানে নেই! ওরা চলে গেছে!”
চলে গেছে! প্রচণ্ড অবাক হয়ে, জ্যাক চেঁচায়। ওরা যেতে পারে না! ওখানেই থাকবে!”
না ওরা নেই, মাইক বলে। পুরোপুরি হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে! এমন কি একটাও নেই!
বাচ্চারা সবাই মুরগির উঠোনের দিকে ছোটে এবং বিস্ময় আর আতঙ্কে ফাঁকা জায়গাটির দিকে তাকিয়ে থাকে।  
তোমার কি মনে হয় এখানে এমন কেউ আছে যারা ওদের নিয়ে গেছে? পেগি বলে।  
না, দৃঢ়কণ্ঠে জ্যাক বলে, এখানে দেখো! এটাই ওদের অদৃশ্য হওয়ার কথা ব্যাখ্যা করে!”

সে বেড়ার ফুটোটা দেখায়। এই ফুটোটা দেখো! এখান দিয়ে ওরা সবাই ভেগেছে- আর কে বলতে পারে এখন ওরা সব কোথায় আছে!

ওদের বেরিয়ে যাওয়ার শব্দ তো পেলাম না, পেগি বলে। আমি একাই এখানে ছিলাম। ঝরনায় পানি আনতে যাওয়ার পর বেরিয়ে যেতে পারে!

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।