ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

আটুল আর বাটুল (পর্ব)-১ | বিএম বরকতউল্লাহ্

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
আটুল আর বাটুল (পর্ব)-১ | বিএম বরকতউল্লাহ্ আটুল আর বাটুল

কুকুরের যন্ত্রণায় অস্থির। গ্রামের মানুষ গেলো ক্ষেপে। লাঠি, বেন্দা, শাবল, খুন্তি যে যা হাতের কাছে পেয়েছে তাই নিয়ে শুরু করলো বাড়ি। কয়েকটা কুকুর সাথে সাথেই শেষ। কয়েকটার অবস্থা মর মর। আর কয়েকটা ল্যাংড়া-লুলা হয়ে চিঁচিঁ-কোঁ-ক্যাঁ করছে। কুকুরের ওপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে গেলো। 

একটা কুকুর আর একটা কুকুরি কোন ফাঁকে কেমন করে যেন পালিয়ে গেলো। তারা গ্রাম ছেড়ে এক বনের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।

একটা গাছের ছায়ায় বসে তারা বেদম হাঁপাতে লাগলো।  
অনেক ক্ষুধা এদের পেটে। আর শরীরেও নেই তেমন শক্তি।  
কুকুর বললো, পায়ের জোরে কোনোমতে জীবন বাঁচালাম, এখন ক্ষুধা থেকে বাঁচি কিভাবে।
কুকুরি বললো, মানুষ আমাদের ওপর খুব রেগে আছে। এখন কোনো গ্রামে আশ্রয় নেওয়া ঠিক হবে না-চলো আমরা পাশের ওই বনে চলে যাই।
কুকুর বললো, বনে যাওয়ার আগে আমাদের রূপ বদলানো উচিত।  
সেটা কীভাবে, বলল কুকুরি।
সোজা, কাদা পানি আর রং মেখে আমরা নতুন কোনো প্রাণীর রূপ ধারণ করবো।  
তারা তাই করলো।
 
তারা বনের পাশে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে, বনের ভেতরে নানা জাতের ছোট ছোট পশু-পাখি আছে। তারা কুকুর আর কুকুরি আরেকটু এগিয়ে গেলো। সামনে এগুতেই দেখে কয়েকটা শেয়াল বসে কি যেন বলাবলি করছে।  
 
এক শেয়াল কান খাঁড়া করে বললো, কে? কে তোমরা এখানে এসে ইতিউতি করছো?
কুকুরি খুব নরম সুরে বললো, ভাই শেয়াল তোমরা আমাদের চিনতে না পারলেও আমরা ঠিকই তোমাদের চিনতে পারছি।  
আরেকটা বয়স্ক শেয়াল কাছে এসে বললো, তোমাদের নাম-পরিচয় কি বলো।  
কুকুর বললো, আমার নাম আটুল আর ওর নাম বাটুল।  
কুকুরি বললো, আসলে আটুল বাটুল আমাদের আসল নাম না, মানুষ আমাদের আদর করে আটুল বাটুল বলে ডাকে।  
শেয়াল কান খাড়া করে বললো, মানুষ তোমাদের আদর করে? আবার আদর করে আটুল বাটুল বলেও ডাকে? ভারি মজার কথা তো? আমরা তো মানুষের ভয়ে বন থেকে বের হতে পারি না।  
তাহলে তোমাদের আসল পরিচয় কি?
আমাদের আসল পরিচয় আমাদের কাজে-কথার মধ্যে নয়। বলল কুকুরি।
বাহ্, চমৎকার কথা। তো তোমরা এখানে কী চাও?
 
কুকুরি বললো, আমরা এই সুন্দর বনে তোমাদের সঙ্গে থাকতে চাই। কারণ গ্রামের মানুষকে শান্তি দেওয়ার কাজ শেষÑ এখন বনে শান্তি বিতরণ করতে এসেছি আমরা।
 
শান্তি? শেয়ালেরা চোখ গোল করে বলে, আমরা তো শান্তিতেই আছি। এখানে তো কোনো অশান্তি নেই। আমাদের এ শান্তির বনে তোমাদের কোনো দরকার নেই। যেখানে শান্তি নেই সেখানে গিয়ে শান্তি বিতরণ করোগে।
 
কুকুরি বললো, আরে ভাই তোমরা যেভাবে আছো, তাকেই বলছো শান্তিতে আছি। সুখ-শান্তির কি শেষ আছে ভাই। আমরা বনে সবার মাঝে এমন সুখ আর শান্তি বিলিয়ে দেবো যে, তোমরা আফসোস করে বলবে, হায়রে, আগে যদি তোমাদের পেতাম, তো জীবন কতো সুন্দর আর আনন্দময় হতো!
 
শেয়ালেরা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বললো, আচ্ছা তোমরা থাকো আমাদের সাথে। আমরা দেখতে চাই, এ বনে তোমরা কেমন সুখ আর শান্তি বিলিয়ে দিতে পার।
 
কুকুরেরা বনে থাকতে শুরু করলো।

চলবে....
ইচ্ছেঘুড়ি
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।