ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে রৌশন আক্তার লিপি (২৩) নামে এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে তার স্বামী মো. ইসমাইল হোসেন সুজনকে (২৮) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।  

একই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সুজনের প্রেমিকা সুমি বেগমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। সুজন পলাতক। রায়ের সময় সুমি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জসিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

দণ্ডপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন সুজন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের ঘরোয়ার বাড়ির মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে। তার প্রেমিকা সুমি ওরফে সুরমা আক্তার একই বাড়ির মো. সুমনের স্ত্রী। হত্যা মামলার বাদী ভিকটিম লিপির মা আলেয়া বেগম (৪৩)।  

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের দিকে সুজনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ধীতপুর গ্রামের আলেয়া বেগমের মেয়ে রৌশন আক্তার লিপির বিয়ে হয়। বিয়ের পর লিপি জানতে পারেন, তার স্বামী সুজনের সঙ্গে সুমি নামে এক নারীর পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে তাদের সংসারে কলহ সৃষ্টি হয়। পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় সুজন তার স্ত্রী লিপিকে বিভিন্ন সময় মারধরও করতেন। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠকে সুজনকে সতর্ক করেন তার স্বজনরা। ২০২০ সালের ২ মে সকালে সুজনের সঙ্গে লিপির ঝগড়া হয়। এদিন দুপুরে লিপির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লিপির মা আলেয়া বেগম ওই দিন বাদী হয়ে লিপির স্বামী ইসমাইল হোসেন সুজন ও তার  প্রেমিকা সুমি ওরফে সুরমা আক্তারের নামে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে তাদের নামে লিপিকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়। পরে পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।  

এদিকে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে লিপিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মামলাটি তদন্ত করেন চন্দ্রগঞ্জ থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম।  

মামলাটি তদন্তের পর প্রতিবেদনে সুজন ও সুমিকে এ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। তদন্তে সুজন ও সুমি মিলে লিপিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মৃতদেহ একটি ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। তিনি ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন।  

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া মান্না বলেন, মামলাটি মূলত আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ছিল। কিন্তু ময়নাতদন্তে ভিকটিম লিপিকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন আসে। হত্যার ঘটনায় আদালত ইসমাইল হোসেন সুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। কিন্তু সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।