ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কবজি হারিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় বসা হলো না সাইমুনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৩
কবজি হারিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় বসা হলো না সাইমুনের হাসপাতালে সাইমুন।

বরিশাল: সড়ক দুর্ঘটনায় হাতের কবজি হারিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী সাইমুন (১৬)।  

বানারীপাড়ার সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

একই ইউনিয়নের দিদিহার গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সাইদুল ইসলামের মেয়ে সাইমুন।

বর্তমানে সাইমুন ঢাকার মোহম্মদপুরে বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে জানিয়ে সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কমল কান্তি বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী সাইমুনের  ক্লাসের রোল নম্বর ছয়। বাইশারী পরীক্ষাকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সে পরীক্ষা দিতে পারেনি।

রাইটারের মাধ্যমে তার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, গুরুতর অসুস্থ থাকায় সেভাবেও পরীক্ষা দিতে পারছে না সাইমুন।

ভুক্তভোগী সাইমুনের বাবা সাইদুল ইসলাম জানান, ২৭ এপ্রিল বিকেলে হোমিওচিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশায় বাইশারী বাজারের দিকে রওনা দেয় সাইমুন। পথে সাইমুনের ওড়না অটোরিকশার ফাঁকা দিয়ে মোটরের সঙ্গে পেঁচিয়ে যায়। আর সেই ওড়না ছাড়াতে গিয়ে তার ডান হাত ঢুকে যায়। এতে সঙ্গে সঙ্গে সাইমুনের ডান হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথমে তাকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, আর সেখান থেকে পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা ঢাকায় পাঠানোর হয়।

তিনি জানান, ওই রাতে তার হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু বিচ্ছিন্ন হওয়া তার হাতের কবজি সংযুক্ত করা সম্ভব হয়নি।

মেয়েটির উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করে দিনমজুর অসহায় সাইদুল বলেন, মাটিকাটা শ্রমিক হিসেবে ছয় মাস কাজ করি, বাকি সময় অন্যান্য কাজ করে মেয়ে সাইমুনসহ অপর তিন ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছি।

এদিকে এখন পর্যন্ত মেয়ের চিকিৎসায় দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর বেশিরভাগ টাকাই ধার করা হয়েছে। চিকিৎসায় আরও টাকার প্রয়োজন রয়েছে, তবে তার কোনো যোগার এখনও হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২৩
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।