ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাকে সেবা দিতে শেবাচিমে এনে লাঞ্ছিত ববি ছাত্র, ৪ আনসার ক্লোজড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
মাকে সেবা দিতে শেবাচিমে এনে লাঞ্ছিত ববি ছাত্র, ৪ আনসার ক্লোজড

বরিশাল: শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়াতে গিয়েছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত। সেখানে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।

এ ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত চার আনসার সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে।

ক্লোজড হওয়া আনসার সদস্যরা হলেন- এপিসি হেমায়েত উদ্দিন, শা‌কিল, হ‌া‌নিফ ও রিয়াজ। তা ছাড়া ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিও গঠন করেছে আনসার কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (১৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে শেবাচিমের নিচতলায় ববি শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা পেতে টিকিত সংগ্রহ করতে এক নারী এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। গরম পরিবেশ হওয়ায় তিনি লাইন থেকে সরে এসে ফ্যানের নিচে দাঁড়ান। এ সময় এপিসি হেমায়েত উদ্দিন তাকে লাইনে গিয়ে দাঁড়াতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক হয়। এসব দেখে ওই নারীর ছেলে ও ববি ছাত্র শান্ত দৌড়ে আসেন। তিনিও হেমায়েতের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। এক পর্যায়ে শান্তর সঙ্গে হেমায়েত ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এসব দেখে শান্ত মা হেমায়েতকে পেটাতে শুরু করেন। পরে অপর আনসার সদস্য শা‌কিল, হানিফ, রিয়াজ ঘটনাস্থলে এসে শান্তকে ধরে পরিচালকের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে জানা যায় শান্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

এর আগে শান্ত ফোন করে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ও পরিচিতজনদের আসতে বলেন। তারা এলে হাসপাতালে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ববি শিক্ষার্থীরা আনসার সদস্যদের দোষী উল্লেখ করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে।

এসব ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতাল পরিচালকের কার্যালয়ে ছুটে আসেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল হক, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভাগীয় প‌রিচালক আশরাফুল আলম ও জেলা কমান্ডার বাসুদেব ঘোষ। পরে তাদের সামনেই আনসার কর্মকর্তারা নিজেদের সদস্যদের (শেবাচিমের) ববি শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইয়ে ঘটনার মীমাংসা করেন।

শেবাচিম হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মোশারেফ হোসেনও এসব তথ্য জানান। তবে তিনি আরও জানান, ঘটনার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এপিসি হেমায়েত উদ্দিনসহ শা‌কিল, হ‌া‌নিফ, রিয়াজ ও জিহাদকে ক্লোজড করার নির্দেশ দিয়েছেন। তারা নিজেদের বাড়ি চলে যাবেন।

শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে রোগীর ছেলে ও ববি ছাত্র শান্তকে কলার টেনে ধরে মারধর করতে দেখা গেছে। তাই ওই চার আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি ৩ মাস পর পর হাসপাতালে আনসার সদস‌্য প‌রিবর্তন করতে বলা হয়েছে।

বরিশাল জেলা আনসার কমান্ডার বাসুদেব বলেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরসহ সবার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসপাতাল ও আনসারের এমন পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার ভুক্তভোগী শান্তও ঘটনার সমাধান হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, আমরা সন্তুষ্ট। এখন আর আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।