ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সমাবেশে লোক কম নেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩
সমাবেশে লোক কম নেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০ সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

শরীয়তপুর: শরীয়তপুর সদর উপজেলার বুড়িরহাট আঞ্চলিক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। এসময় বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও শতাধিক হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।  

সমাবেশে লোক কম নেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ বাধে বলে জানা গেছে।

সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বুড়িরহাট বাজার এলাকার শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়ক এলাকায় বুড়িরহাট আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি জুম্মান বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক তাওসিফ আহম্মেদের গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।  

এঘটনায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক ও রুদ্রকর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহব্বত খান মাসুদ, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মোল্যা, ডামুড্যা উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য নান্নু বেপারীসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।  

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগের সমাবেশে লোক কম নেওয়াকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ঢাকায় বসে কথা কাটাকাটি হয়।  

ওই ঘটনা নজরে এলে জেলা ছাত্রলীগ বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়। কিন্তু ওই ঘটনার জের ধরে গত শনিবার তাওসিফ গ্রুপের লোকজন জুম্মানের চাচা আব্দুস সামাদ বেপারীকে মারধর করে। মারধরের বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার সময় নির্ধারণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।  

সালিশের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও  সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, রাম দা, ছেন দা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।  

হামলাকারীরা ইয়াসিন বেপারীর হোটেলসহ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। খবর পেয়ে পালং থানা ও ডামুড্যা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় পক্ষে  ইয়াসিন বেপারী (৪০), কালু বেপারী (৩৪), মহাম্মদ আলী (৩০), হান্নান বেপারী (৩২), জুম্মন বেপারী (২৮), ইমন বেপারী (২৪), সিজান বেপারী (১৭), মালেক হোসেন (২৬) আতাউর রহমান (২০)  ও আহাম্মদ আলী (৩০) সহ অন্তত ২০ জন মারাত্মক আহত হয়।  

পরে আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে এদের মধ্যে আহাম্মদ মারাত্মক আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে।

আহত কালু বেপারী বলেন, ছাত্রলীগের সমাবেশে লোক নেওয়া কেন্দ্র করে বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের লোকজন রুদ্রকর ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডের মেম্বার ও সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক মহব্বত খান মাসুদ তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এর পর দুই গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

আহত আব্দুর রহমান ঢালী বলেন, ছাত্রলীগের প্রোগামকে কেন্দ্র করে জুম্মন বেপারীর ভাই নান্নু মেম্বারের লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এসময় আমার সঙ্গে থাকা ৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়।  

বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুম্মন বেপারী বলেন, ঢাকার সমাবেশে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। সেই ঘটনা জেলা ছাত্রলীগের নেতারা মীমাংসা করে দেয়। তারপর এলাকায় এসে আমার চাচাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে সাধারণ সম্পাদকের লোকজন।

বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওসিফ আহম্মেদ বলেন, ঢাকার বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগ ঢাকায় বসে মীমাংসা করে দিয়েছেন। আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। বুড়িরহাটে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে শুনেছি। তবে কী নিয়ে হাতাহাতি হয়েছে তা আমি জানি না। আমি বা আমার কোনো লোক ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।

জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদউজ্জামান বলেন, পূর্ব থেকেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই এলাকার দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে ঝামেলা চলে আসছিল। মূলত সেখান থেকেই আজকের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

পালং মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে। এঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।