ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অগ্নি নিরাপত্তার নোটিশ পাননি, কৃষিমার্কেটের দোকানিদের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
অগ্নি নিরাপত্তার নোটিশ পাননি, কৃষিমার্কেটের দোকানিদের দাবি

ঢাকা: ফায়ার সার্ভিস কিংবা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে কৃষিমার্কেট ব্যবসায়ীদের অগ্নি নিরাপত্তা বাড়াতে বার বার বলা হয়েছে দাবি করলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন অন্যকথা।

কোনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ফায়ার সেফটি বাড়ানো কিংবা মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ এমন কোন নোটিশ ব্যবসায়ীরা পাননি বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান টিপু।

তার দাবি, কৃষি মার্কেটে লাগা ভয়াবহ আগুনে ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৪০০ দোকানের মধ্যে পুড়ে গেছে তিন শতাধিক দোকান। এজন্য দোকানের মালিকদের নয়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদেরকেই যেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।  

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া কৃষিমার্কেট পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে প্রায় ৪০০ দোকান রয়েছে। প্রায় সব পণ্যই এই মার্কেটে পাওয়া যায়। এখানে প্রত্যেকটি দোকানে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি হয় যে কারণে কৃষি মার্কেট খুবই জনপ্রিয়। প্রত্যেকটি সিটি কর্পোরেশনের মার্কেটে কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ভোরে। যখন বৈদ্যুতিক ইউনিট ব্যবহার জিরোতে থাকে। এমন সময় আগুন লাগার ঘটনা অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যেকটির দোকান কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  অধিকাংশ দোকান থেকে মালপত্র বের করা সম্ভব হয়নি।  আনুমানিক ৩০০-৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, আগুন নির্বাপনের পর আমরা দোকান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করবো, কার কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষতিপূরণ কিভাবে নিতে পারেন, সরকার কিভাবে পাশে দাঁড়াবে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।  

ফায়ার সার্ভিস দাবি করেছে, তারা আপনাদেরকে নোটিশ করেছেন, ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষও বলেছে নির্দেশনা দেওয়ার পরেও ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই কৃষি মার্কেট যে ঝুঁকিপূর্ণ সে ধরনের নির্দেশনা বা কাগজপত্র আমরা দোকান ব্যবসায়ীরা পাইনি। যদি কোন দোকান ব্যবসায়ী পেয়ে থাকে তাহলে আমরা মেনে নেবো।

তিনি বলেন, টিনশেড মার্কেট ভেঙে বহুতল মার্কেট করার কথা বলেছে সিটি কর্পোরেশন। আমরা শুধু একটাই কথা বলেছি যার যে দোকান সে যেন সেটি বরাদ্দ পায়। বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সময়ও আমরা এই কথাই বলেছি যে, যার যে দোকান সেটি যেন বরাদ্দ পায়। বাইরে থেকে কোন লোকজন এসে যেন বরাদ্দ না পায়।  

আরিফুর রহমান টিপু বলেন, যার নামে দোকান বরাদ্দ তিনি কিন্তু তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হননি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যারা ভাড়ায় নিয়ে এখানে দোকান করছেন। যিনি দোকানে সাটার খোলেন তিনিই আসল ক্ষতিগ্রস্ত। টিনশেড এই মার্কেট ভেঙে বহুতল ভবন করা হলে দোকানের বরাদ্দ যেন দোকান মালিকরা পান। আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা যেন ক্ষতিপূরণটা পান।

বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, কৃষি মার্কেট যে ঝুঁকিপূর্ণ এ ধরনের কোন নোটিশ আমরা পাইনি। আমরা আশঙ্কাও করিনি যে মার্কেটটা ঝুঁকিপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিস যে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করেছে সেগুলোতে কিন্তু আমরা অংশগ্রহণ করেছি এবং সেটা পরিপালন করার চেষ্টা করছি।

ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ বলেন, এই মার্কেট যদি ঝুঁকিপূর্ণই হবে তবে বন্ধ করা হলো না কেন? আগুন লাগার পর কেন বলা হচ্ছে এটা ঝুঁকিপূর্ণ? আমিতো ব্যবসায়ী আমার অপরাধটা কোথায়? এটা যদি ঝুঁকিপূর্ণই হবে তাহলে কেন আগে বন্ধ করেননি?

তিনি বলেন, আগুন লাগলে দোকানের মালিক ক্ষতিপূরণ পায় কেন? আগুন লাগলে ক্ষতি তো হয় দোকান ব্যবসায়ীর, দোকান মালিকের হয় না।

সরকার পারেনা এমন তো কিছু নেই। ঢাকা শহরে যতগুলো ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট আছে সরকার সেগুলো বন্ধ করে দিক। আমি ব্যবসায়ী আগুনে সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়ার পর কেন শুনতে হবে এটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
পিএম/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।