ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গণমাধ্যমে ভিসানীতি নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন পিটার হাস

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
গণমাধ্যমে ভিসানীতি নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন পিটার হাস ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস: ফাইল ফটো

ঢাকা: গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনামকে লেখা এক চিঠিতে তিনি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এক সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের ভিসানীতির বিষয়ে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাকে চিঠি পাঠান সম্পাদক পরিষদের  সভাপতি মাহফুজ আনাম। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সেই চিঠির উত্তর দেন পিটার হাস।

চিঠিতে পিটার হাস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাংবাদিক ও মিডিয়া আউটলেটদের বিশ্বব্যাপী তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগের অধিকার রক্ষা করে। সে অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যেকোনো সরকারের সমালোচনামূলক মতামত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমরা আমাদের নীতির যেকোনো উপাদানে জনসাধারণের প্রতিফলনকে স্বাগত জানাই।

সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন গত ২৪ মে থ্রি-সি ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব প্রত্যেকের-ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়া। সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এসব  প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাদের নিজ নিজ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে। সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য পরিষ্কার ছিল। নীতিটি যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যাকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা হয়।

আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখব। যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলব এবং আমাদের ভিসানীতি প্রয়োগ করব।

এদিকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপরও ভিসানীতি প্রয়োগ হতে পারে- ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের এমন মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ।  

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর)  সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ২৪ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাবেক-বর্তমান সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গণমাধ্যমও আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে যুক্ত হবে।

এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে উদ্বেগ জানিয়ে সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ২৭ সেপ্টেম্বর ইমেইলে একটি চিঠি পাঠান পিটার হাসকে। চিঠিতে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগের বিষয়টি তার মনে এবং সম্পাদক পরিষদের সদস্যদের মনে কিছু প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, সত্যি বলতে-এ মন্তব্যটি আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। তাই ব্যাখ্যার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন সরকার এবং রাষ্ট্রদূত ব্যক্তিগতভাবে সবসময় মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের অটল প্রবক্তা। তাই এ মন্তব্য আমাদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।

সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনামের চিঠির প্রেক্ষিতে ২৮ সেপ্টেম্বর  মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাকে চিঠি পাঠান।  চিঠিটি ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস প্রকাশ করেছ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
টিআর/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।