ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নওগাঁয় দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
নওগাঁয় দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

নওগাঁ: নওগাঁয় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার জেরে দ্বিতীয় দিনের বন্ধ রয়েছে আন্তঃজেলা ও জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে বাস চলাচল। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই চালকরা আগের দিনের মতো গাড়ি বন্ধ রেখে এই কর্মসূচি পালন করছেন।  

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকাল থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে শহরের বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। টার্মিনালে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে আন্তঃজেলা ও জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহনের শতাধিক বাস। জেলা শহর থেকে থেকে ঢাকা-রাজশাহীসহ দূরের গন্তব্যে ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় যাওয়ার জন্য যাত্রীরা টার্মিনালে এসে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে এসে বাস না পেয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। যাত্রীদের একমাত্র ভরসা বিআরটিসি পরিবহনের বাস, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। তবে ইজিবাইকে যেতে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। বাধ্য হয়ে অনেক যাত্রী বেশি ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন।

বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা হান্নান নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বাংলানিউজকে বলেন, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনো বাস পাইনি। আবার অটোরিকশার ভাড়া চাচ্ছে বেশি। এখন বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অফিসে যেতে হবে।  

আরেক যাত্রী আকরাম হোসেন বলেন, আমাকে জরুরি ভিত্তিতে রাজশাহী যেতে হবে। অনেকক্ষণ ধরে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি, কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। এত দূর রাস্তা অটোরিকশায় করে যাওয়াও সম্ভব নয়। এখন রাজশাহী যাওয়া নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম।

জানা গেছে, গত ১৬ অক্টোবর বিকেলে নওগাঁর মান্দায় ফেরিঘাট এলাকায় মহাসড়কে অটোরিকশা চালাতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের (বাস ও অটোরিকশা) মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার পর সন্ধ্যায় নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়া, বাস মালিক গ্রুপের লাঠিয়াল বাহিনী রাস্তা থেকে প্রত্যাহার এবং অটোরিকশা চালককে মারধরের প্রতিবাদে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকরা সড়ক অবরোধ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।  

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়। একই ঘটনার জেরে গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে বাস ধর্মঘটের ডাক দেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা।

জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়নের এক সদস্যকে সিএনজি সমিতির লোকজন মারধর করেছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ শ্রমিকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। এই সমস্যার সমাধানের জন্য বুধবার দুপুরে বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই সমাবেশে বাস চলাচলের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

নওগাঁ সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশিক হোসেন বলেন, গত ১৬ অক্টোবর আমাদের সঙ্গে যে সমস্যা হয়েছিল, সেই সমস্যা রাতেই বসে সমাধান হয়ে গেলে সকাল থেকে বাস-সিএনজি চলাচলের কথা ছিল। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা বাস চলাচল বন্ধ রাখেন। পরে জানতে পারলাম, বগুড়া বাস মালিক গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তারা মূলত বাস বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা তারা সামনে নিয়ে আসছেন। আমরা জনগণের ভোগান্তি যেন না হয়, এ জন্য অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রেখেছি।  

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, নওগাঁয় বাস ও অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসন করে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।

** নওগাঁয় বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।