ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফিলিস্তিনে গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৩
ফিলিস্তিনে গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ

ঢাকা: ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইলের পরিচালিত নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রস্তাবের উপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করেন এবং গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

সোমবার(৩০ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ১৪৭ বিধিতে এ সাধারণ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

প্রস্তাবে বলা হয়, সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইল কর্তৃক পরিচালিত নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছে। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মানবাধিকারের চরম বিপর্যয় ঘটেছে। এই সংসদ ফিলিস্তিনে মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্বের সকল বিবেকবান জনগণ, রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষা এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কার্যকরভাবে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।

প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য ইসরাইলের তীব্র সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে এই গণহত্যার জন্য দায়ি ইসরাইলকে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রেরও তীব্র সমালোচনা করা হয়। এ সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা চালানো পাকিস্তানের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়টি তারা তোলেন। আলোচনা থেকে গাজার গণহত্যা দ্রুত বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা বিরোধীতা করেছিলো তারাই ফিলিস্তিনে এই ইসরাইলের গণহত্যাকে সমর্থন করছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে আইসিসি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে আইসিসি কোনো কথা বলছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটাকে সমর্থন দিয়ে ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধ জাহাজ পাঠাচ্ছে। অবাক বিষয় হলো মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো কোনো কথা বলছে না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ফিলিস্তিনে এই গণহত্যাকে সমর্থন করেছে। তাদের মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা খুবই শোনা যায়। ইসরায়েলকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে তা বাতিল করতে হবে। ইসরাইল তো কোনো রাষ্ট্র হতে পারে না। ফিলিস্তিনিকে ধ্বংস করার জন্য পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী ইসরাইলকে সমর্থন দিয়েছে এটা নিন্দনীয়। ফিলিস্তিনে এই গণহত্যার বিএনপি কোনো নিন্দা করেনি। বিএনপি সন্ত্রাসী দল তার সঙ্গে ইসরাইলই মেলে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, পশ্চিমা দেশের নেতারা ইসরায়েলে ছুটে গেলো। বললো তাদের ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন আছে। গণতন্ত্রের কথা বলে তারা, তারা আফগানিস্তান ধ্বংস করেছে, ইরাকের সাদ্দামকে ধ্বংস করেছে। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সময় আমরা যখন ভয়াবহ যুদ্ধ করছি তখন যুদ্ধ বিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব দিয়েছিলো। তখন সোভিয়েত ইউনয়ন ভেটো দিয়ে তাদের রুখে দিয়েছিলো। রাশিয়া আমাদদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো, ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, পাকিস্তানিরা ৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছিলো। একইভাবে ইসরাইল ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৭১ এর সেই হত্যাকে নিন্দা জানায়নি, পাকিস্তানের সমর্থন দিয়েছিলো।  

বাংলাদেশ সময় ২২৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০২৩
এসকে/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।