ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইয়াবা দিয়ে ভাইকে ফাঁসানোর অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২৩
ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইয়াবা দিয়ে ভাইকে ফাঁসানোর অভিযোগ

মাদারীপুর: মাদারীপুরের পশ্চিম রাস্তি গ্রামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কিশোরীর ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  

এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে কিশোরীর পরিবার। প্রতিকার চেয়ে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি গ্রামের আজিজুল পেদার ছেলে প্রান্ত পেদার (২৫) সঙ্গে প্রতিবেশী এক কিশোরীর (১৭) প্রেমের সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে ওই কিশোরীকে ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। তখন কিশোরী বিয়ের জন্য প্রান্তকে চাপ দিলে প্রান্ত ও তার পরিবারের লোকজন ৩০ নভেম্বর কিশোরীকে মারধর করে।

পরে কিশোরীর মা বাদী হয়ে গত শনিবার ধর্ষণ ও মারধরের বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দেওয়ার পর প্রান্তর পরিবার থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল।  

এই অভিযোগের বিষয় তদন্ত করার কথা বলে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মাদারীপুর সদর থানার এসআই কামাল হোসেন বাদী ও কিশোরীকে থানায় ডেকে আনেন। পরে এসআই কামাল হোসেন বাদীকে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেন। কিন্তু কিশোরীর পরিবার মীমাংসায় রাজি হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয় প্রান্তের পরিবার।  

মঙ্গলবার রাতে মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সাগরসহ ৪জন ওই কিশোরীর বাড়ি তল্লাশির কথা বলে ঘরে ঢোকে। পরে কিশোরী ও তার ভাইকে তল্লাশি করে। এসময় ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাইয়ের কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে এমন অভিযোগ এনে তাকে গ্রেপ্তার করে।  

ভুক্তভোগী কিশোরী বলে, পাশের বাড়ির একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে নিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। এরপর একাধিক বার আমাকে ধর্ষণ করে। পরে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো আমার ভাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে কিশোরীর মা বলেন, আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। থানায় অভিযোগ দিলে এসআই কামাল হোসেন আমাদের মীমাংসার প্রস্তাব দেন তাতে রাজি না হলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, মীমাংসা না করলে তোমাদের ক্ষতি হতে পারে। পরে আমার ছেলেকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, 'ধর্ষণের ঘটনায় অবশ্যই মামলা হবে। তবে তদন্তের জন্য মামলা নিতে কিছুটা দেরি হয়েছে।  

ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কিশোরীর পরিবার এইসব বিষয় একটি অভিযোগ দিয়েছে। ইয়াবার ঘটনাটি তদন্তের জন্য পুলিশের একজন সিনিয়র অফিসার নিযুক্ত করা হয়েছে। কার কাছ থেকে কীভাবে পুলিশ তথ্য পেয়ে ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিষয়টি তদন্ত হলেই রহস্য উদঘাটন হয়ে যাবে। যদি কোনো পুলিশের অপেশাদার আচরণ থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।