ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাই ট্রাকের পক্ষে, নারী মেম্বারকে চেয়ারম্যানের ঘাড়ধাক্কা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
ভাই ট্রাকের পক্ষে, নারী মেম্বারকে চেয়ারম্যানের ঘাড়ধাক্কা  অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সেলিম রেজা ও ভুক্তভোগী নারী মেম্বার রহিমা খাতুন

মেহেরপুর: ভাই ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস করায় এক নারী মেম্বারকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজার বিরুদ্ধে।  

এই ঘটনায় চেয়ারম্যান সেলিম রেজার বিচার চেয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য রহিমা খাতুন।

 

পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালের দিকে মেহেরপুর জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সেখানে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য রাহিমা খাতুন অভিযোগ করেন, “আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চেয়ারম্যান সেলিম রেজা পরিষদের সকল সদস্যদের ইউনিয়ন পরিষদে তার অফিসে আসতে বলেন। তিনি মেম্বরদের তার অফিসকক্ষে বসিয়ে বলেন, ‘কে কে নৌকার পক্ষে ভোট করবেন তা বলে যেতে হবে। ’ সাধারণ সদস্যরা তাদের নিজেদের মত বলেন। এসময় ৩ জন নারী সদস্য কোনো কথা না বলায় চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, না‘রী সদস্যরা কিছু বলছেন না কেন?’ এ সময় আমরা তিনজন নারী সদস্য বলি, আমাদের তো কোনো জায়গায় ডাকা হয় না। বিভিন্ন কারণে অপমান-অপদস্থ করা হয়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। এরপর তিনি আমাকে বলে ওঠেন, ‘তোর ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কার অফিস করেছে। ’ বলেই আমাকে পরিষদ থেকে বের করে দিতে উদ্যত হন তিনি। আমি বের হতে না চাইলে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তার কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে বলেন - ‘আর কখনো পরিষদে আসবি না। ’”

ইউপি সদস্য রহিমা খাতুন আরও বলেন, আমি থাকি উজলপুর আর আমরা ভাই থাকে কালীগাংনী গ্রামে। ভাই সেখানেই স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নানের ট্রাক প্রতীকের অফিস করেছেন। এটাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান সেলিম রেজা আমাকে অপমান -অপদস্থ করে, গালাগাল দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। আমি বের না হলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন তিনি। আমি এর বিচার চাই।  

এ ব্যাপারে টার্নিং অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ডাবু হোসেন নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওই নারী সদস্য পরিষদ থেকে বের হয়ে কান্নাকাটি করেছেন। আমরা কয়েকজন লোক গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান ও কয়েকজন মেম্বার মিলে ওই মহিলা মেম্বারকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এর পর পরই চেয়ারম্যান সেলিম রেজা তার লোকজন ও মেম্বরদের নিয়ে বের হয়ে যান।

পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রাজন আলী বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব সকল সদস্যদের  নির্বাচনের বিষয়ে ডেকেছিলেন। এর মধ্যে ৪,৫,৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রহিমা খাতুনকে বলেন, তোমার ভাই ট্রাকের অফিস করেছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।  এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান রহিমা খাতুনকে বলেন, তুমি আর ইউনিয়ন পরিষদের আসবা না। তিনি তাকে বের হয়ে যেতে বলেন।

তবে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, পরিষদের এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

মেহেরপুর সদর থানার ওসি শেখ কনি মিয়া অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সবাইকে পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বলেছি।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শামিম হাসান বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।