ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের অনশন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের অনশন

বগুড়া: বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেও প্রতিকার না পেয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনশন করেছেন নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা আকতার।  

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বগুড়া জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় চত্বরে অনশন করেন তিনি।

ফাহিমা আক্তার বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নারী বিষয়ক সম্পাদক।

রাত সাড়ে ৮টার পর বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০ জন নারীকে সঙ্গে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসে ছিলেন ফাহিমা আকতার। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে তিনি উঠবেন না বলে জানান। এসময় ফাহিমা আকতার অভিযোগ করেন, পুলিশ দিয়ে তাকে সেখান থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে তার হ্যান্ড মাইক কেড়ে নেওয়া হয়।

ফাহিমা অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু তার সঙ্গে বৈরী আচরণ করছেন। পরিষদের কোনো কাজে তাকে সম্পৃক্ত করা হয় না। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছেমতো সব উন্নয়ন কাজ বণ্টন এবং তদারকি করেন। নারী উন্নয়ন ফোরামের সমুদয় টাকা চেয়ারম্যান আটকে রেখেছেন। ফলে উপজেলার নারীরা উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করায় গত ডিসেম্বর মাসে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা লাগানো হয়। একমাস ওই কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল।

ফাহিমা আকতার আরও বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় সোমবার দুপুরে শতাধিক কর্মী সমর্থক নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সর্বশেষ সাক্ষাৎ করতে যাই। কিন্তু আমাদের অফিসে ঢুকতে না দেওয়ায় অফিস চত্বরে অনশন শুরু করি। বিকেল ৩টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশসহ গিয়ে আমাকে সেখান থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু না যাওয়ায় পুলিশ আমার মাইক কেড়ে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি যে নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান করছেন। তিনি তার কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেননি। তবে যতটুকু শুনেছি- তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি আবেদন করেছেন। সেখানে নারী উন্নয়ন ফোরামের ৬০ লাখ টাকা তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার দাবি করেছেন। ইউএনও তাকে বিধি মোতাবেক প্রাপ্য দেওয়ার কথা বলায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

রাতে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগ জানান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না, তাকে কোনো স্বাক্ষর ক্ষমতা (সাইনিং অথরিটি) দেওয়া হয়নি, এছাড়া নারী উন্নয়ন ফোরামের টাকা তার কাছে দেওয়া হচ্ছে না এমন দাবি করছেন। তাকে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে- আইনের বাইরে তাকে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিধান নেই। তিনি তারপরও সেসব না মেনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মাইকে উচ্চ শব্দে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তখন তার মাইকটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।  
এদিকে রাতেই ফাহিমা অনশন বন্ধ করে জানান, আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত তিনি দেখবেন, এর মধ্যে বিষয়টি সুরাহা না হলে তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
কেইউএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।