ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেস্তোরাঁয় খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে পৃথক অভিযান নয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
রেস্তোরাঁয় খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে পৃথক অভিযান নয়

ঢাকা: রাজধানীর আবাসিক ভবনগুলোতে থাকা রেস্তোরাঁগুলোয় এখন থেকে আর খাদ্যের মান তদারকিতে পৃথকভাবে অভিযান পরিচালনা করবে না তদারকি দপ্তর ও সংস্থাগুলো। সরকারের পক্ষ থেকে সমন্বিতভাবে এসব অভিযান পরিচালনা করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

রোববার (৩১ মাচ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অভিযান পরিচালনাকারী দপ্তর বা সংস্থা কর্তৃক পৃথকভাবে অভিযান পরিচালনা না করে সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তবে শুধু রেস্তোরাঁয় খাদ্যের মান ও নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে সমন্বিতভাবে তদারকি করবে তদারকি সংস্থাগুলো। এর বাইরে আবাসিক ভবনে রেস্তারাঁ তৈরির অনুমোদন, লাইসেন্স প্রদান বা অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ কিনা সেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিজেদের মতোই অভিযান পরিচালনা করবে।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সম্প্রতি বেইলি রোডে একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর সরকরি বিভিন্ন তদারকি সংস্থাগুলো মাঠে কাজ করছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অভিযান পরিচালনাকারী দপ্তর বা সংস্থা কর্তৃক পৃথকভাবে অভিযান পরিচালনা না করে সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত কার্যকরে পরবর্তীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি সভা করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সেই সভায় ছয়টি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছে বলে জানান ভোক্তার ডিজি। সেগুলো হলো-

১। প্রত্যেক দপ্তর বা সংস্থার অভিযানের পর অভিযানের স্থান, তারিখ ও ফলাফল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আপলোড করতে হবে। অভিযান পরিচালনাকারী দপ্তর বা সংস্থার ফোকাল পয়েন্টদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলতে হবে। উপপরিচালকের নিচে নয় এমন কর্মকর্তা ফোকাল পয়েন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা ফোকাল পয়েন্টের নাম জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রেরণ করবে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন হবেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর বা সংস্থার মহাপরিচালক বা প্রধানদের গ্রুপে সংযুক্ত করতে হবে।

২। অভিযান পরিচালনাকারী দপ্তর বা সংস্থা নিজেদের অভিযান পরিচালনা কার্যক্রমের একটি চেকলিস্ট তৈরি করে নিজেদের মধ্যে শেয়ার করবেন এবং নিজ নিজ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন।

৩। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের সাথে সময়ে সময়ে সভা করে কমপ্ল্যায়েন্স বিষয়ে রেস্তোরাঁ মালিকদের ধারণা দেবেন।

৪। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে রেস্তোরাঁর তালিকা সরবরাহ করবে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং ট্রেড লাইসেন্সের তালিকা সরবরাহ করবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

৫। অভিযানে শিক্ষামূলক এবং অনুপ্রেরণামূলক লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৬। রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা সমন্বয়ের জন্য দুই মাস পরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব পর্যায়ে সভা করতে হবে।

এ সময় সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগ) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আবু ইউসুফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান, এফবিসিসিআই-এর পরিচালক মো. নিয়াজ আলী চিশতি, ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আঁখি শেখ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান, বিএসটিআই-এর উপ-পরিচালক মো. রিয়াজুল হক, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি ড. মঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।