ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, চেয়ারম্যানের গাড়িচালকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, চেয়ারম্যানের গাড়িচালকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আগ্নেয়াস্ত্র হাতে চেয়ারম্যান টিপুর গাড়িচালক রাসেল, লাল চিহ্নিত

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর শহরে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর গাড়িচালকের হাতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র (শটগান) দেখা যায়।

শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে জেলা শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ধাওয়া এবং হামলায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।

জানা গেছে, ঘটনার সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে থাকা ওই ব্যক্তির নাম মো. রাসেল। তিনি জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর ব্যবহৃত সরকারি গাড়ির চালক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অস্ত্রটি চেয়ারম্যান টিপুর নামে লাইসেন্সকৃত। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে চলা সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্রটি প্রদর্শন করা হয়৷ অস্ত্রটি টিপুর হাতে ছিল না। সেটি গাড়িচালক ও যুবলীগ কর্মী রাসেলের হাতে ছিল। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা সমালোচনা চলছে। টিপু লক্ষ্মীপুরের বহুল আলোচিত সাবেক পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে। তার বড় ভাই এএইচএম বিপ্লব বিএনপি নেতা নুর ইসলাম হত্যা মামলার ফাঁসির আসামি ছিলেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক দণ্ডাদেশ মওকুফ পান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জুমার নামাজ শেষে শহরের চক মসজিদ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা মিছিল করার কথা ছিল। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই মসজিদে নামাজ পড়তে যান। মসজিদ থেকে বেরিয়ে তিনি মুসুল্লিদের ওপর মারমুখী আচরণ করেন। লোকজনকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেন।

পরে টিপুর নেতৃত্বে যুবলীগ-ছাত্রলীগ মিছিল নিয়ে তমিজ মার্কেট এলাকায় টিপুর বাসার ভেতরে অবস্থান নেয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) হাসান মোস্তফা স্বপনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেখানে অবস্থান নেয়।

এদিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মিছিল শেষে হলে কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা বাজার ব্রিজ থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি চকবাজার মসজিদের সামনে গেলেই শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান শুরু করে।

মিছিলটি উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর বাসার সামনে গেলে মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

এতে পুলিশের বাধা ভেঙে লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া ও হামলা করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। তারাও শিক্ষার্থীদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। এরমধ্যে ৭-৮ শিক্ষার্থীকে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে ছাত্রলীগের দুইজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ধাওয়া ও হামলা চলাকালে টিপুর আগ্নেয়াস্ত্রটি তার গাড়িচালক রাসেলের হাতে ছিল। সেটি হাতে নিয়ে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন।

এদিকে ঘটনার পর চেয়ারম্যান টিপুর উসকানিতে সৃষ্ট ঘটনায় উপস্থিত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের টিপুর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর মোবাইলফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানকে তার মোবাইলফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে থাকা ব্যক্তির নাম-পরিচয় পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।