ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বন্যায় দূষিত পানিতে বাড়ছে রোগবালাই

নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪
বন্যায় দূষিত পানিতে বাড়ছে রোগবালাই

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বন্যার পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। খাদ্য সংকটসহ নানা ভোগান্তির সঙ্গে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগবালাই।

দূষিত পানিতে বাসিন্দারা ডায়রিয়া, খোসপাঁচড়াসহ নানা ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যার পানি মাড়িয়ে চলাচল করায় তাদের পায়ের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত দেখা দিয়েছে।

শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নে উত্তর দূর্গাপুর, যাদৈয়া ও মোহাম্মদনগরে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার পেলেও কেউ চর্মরোগের ওষুধ পাননি।

মান্দারীর দূর্গাপুর গ্রামের ভূইয়া বাড়ির বাসিন্দা লাইলী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, বন্যায় আমার ঘরের ভেতরে পানি উঠেছে। কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ঘরের কাদা-পানি পায়ে লাগতে লাগতে পায়ের নীচে ও আঙুলের ফাঁকে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।  

একই বাড়ির বাসিন্দা খোকন ভূইয়া বলেন, দীর্ঘদিন বন্যার পানি জমে থাকায় তা দূষিত হয়ে পড়েছে। কোথাও পানি এক মাস ধরে আটকা, কোথাও ২০ থেকে ২৫ দিন। এসব পানি এখন দূষিত হয়ে পড়েছে। পানি লাগলেই চুলকানি শুরু হয়।

তিনি বলেন, এলাকায় প্রায় বেশির লোকজনের চর্মরোগ। কারো চুলকানি, কারো পায়ের তলা বা আঙুলের ফাঁকে ক্ষত। এ মুহূর্তে ত্রাণের পাশাপাশি চর্মরোগের ওষুধ প্রয়োজন। পানিবন্দি অনেকেই দূষিত পানি মাড়িয়ে দূরদূরান্তে গিয়ে ওষুধ আনতে পারেন না। আর্থিক সচ্ছলতাও নেই।

নির্মাণশ্রমিক কামাল উদ্দিন বলেন, বাড়িতে কোমর পানি। সড়কে হাঁটুর উপরে। প্রতিদিন চার থেকে ছয়বার পানি মাড়িয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। এখন পুরো শরীর চুলকায়। পায়ের তলায় ক্ষত।

সিরাজ হোসেন বলেন, পায়ের তলায় মাংস খসে গিয়ে ছোট ছোট গর্ত হয়ে গেছে। তারপরও প্রতিদিন দূষিত পানি মাড়িয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। বাড়িতে আমার স্ত্রীর ডায়রিরা দেখা দিয়েছে।

নুর হোসেন বলেন, পানিতে নামতেই ইচ্ছে করে না। আঙুলের ফাঁকে ক্ষত হয়ে গেছে। পানি লাগলেই এখন জ্বলে।

শিল্পী বেগম বলেন, নতুন নতুন রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। খাবার কেনার টাকা নেই, ওষুধ কিনব কীভাবে? ত্রাণের সঙ্গে জ্বর বা ব্যথা কিংবা ওরস্যালাইন দেয়। কিন্তু অ্যালার্জির কোনো ওষুধ এখনো দেয়নি।

স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে চারিদিকে পানিবাহিত রোগ বেড়ে গেছে। বেশির লোকজনের ডায়রিয়া, চুলকানি, খোসপাঁচড়াসহ নানা রোগ দেখা দিয়েছে। এ জাতীয় রোগীরা আমার দোকানে এসে ওষুধ নিচ্ছেন। বন্যার পানি দূষিত হয়ে পড়ায় এমন রোগ শুরু হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন আহমেদ কবির বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় আমাদের ৬৪টি মেডিকেল টিম আছে। এ ছাড়া জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মেডিকেল টিমের মাধ্যমে এবং স্বেচ্ছাসেবীরা টিম করে বন্যাকবলিত এলাকায় ক্যাম্পেইন করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।