ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঝুম বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে নগরবাসী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৪
ঝুম বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে নগরবাসী ঝুম বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ সারা দেশে বৃষ্টি ঝরছে। কখনো ঝিরি-ঝিরি, তো কখনো মুষলধারে।

এতে তাপমাত্রা কমে নগর জীবনে স্বস্তি মিলেছে ভোগান্তি বেড়েছে।  

তবে রাজধানীতে  ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে অনেক সড়ক। যে কারণে সড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।  

রাজধানীতে ঝুম বৃষ্টিতে নগরবাসীর ভোগান্তি।  ছবি: শাকিল আহমেদ
অফিস যাওয়ার পথে অনেককেই দোকানের ভেতরে, যাত্রী ছাউনিতে আশ্রয় নিতে দেখো গেছে। ফ্লাই ওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে বহু মোটরসাইকেল চালককে। রেইনকোট পরে কেউ কেউ ঝুম বৃষ্টিতেই রওনা দিয়েছেন অফিসের উদ্দেশ্যে।

ভ্যানচালকদের এই বৃষ্টিতে ভিজেই পণ্য পরিবহন করতে দেখা গেছে। গাড়িতে থাকা পণ্য যেন বৃষ্টিতে না ভিজে যায়, সেজন্য পলিথিন মুড়িয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় পণ্য নিয়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে অনেক চালককে।  

বৃষ্টিতে ভিজেই পণ্য নিয়ে গন্তব্যের পথে ভ্যানচালক।  ছবি: শাকিল আহমেদ

এদিকে ফুটপাতের দোকানিরা নিজেদের ব্যবসার পসরা মিলিয়ে বসতে পারছেন না। অনেকে ত্রিপল ও ছাতা দিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তবে বৃষ্টির কারণে ক্রেতা মিলছে না অন্যান্য দিনের মতো।

সব মিলিয়ে ভারী বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

শুক্রবার রাতে ও ভোরে বৃষ্টির পর শনিবার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঝুম বৃষ্টি জয়েছে। এতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই ঘণ্টার ঝুম বৃষ্টিতে নগরীর বংশাল, পুরান ঢাকা, সেগুনবাগিচা, পান্থপথ, তেঁজকুনিপাড়া, তেজতুরি বাজার, গ্রিনরোডসহ বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়৷ কোথাও কোথাও হাঁটু পানি জমে যায়। এতে ভোগান্তি পড়তে হয় সেসব সড়কে চলাচল করা মানুষদের।

সচিবালয়ের সামনে আব্দুল গণি রোড, প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা, নাইটিঙ্গেল মোড়, বংশাল, সেগুনবাগিচা এলাকায় নিম্নাঞ্চলে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।

সেগুনবাগিচার আব্দুল গণি রোডে কথা হয় রিকশাচালক আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে গেলে রিকশা চালানো যায় না। অনেক কষ্ট হয়। আবার গর্তে পড়ে রিকশা উল্টে যাওয়ারও শঙ্কা থাকে। অনেকেই এভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এবং হচ্ছেন।

বৃষ্টিতে ভিজে গন্তব্যের পথে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী।  ছবি: শাকিল আহমেদ

মোটরসাইকেল চালিয়ে অফিসগামী যুবক মো. সোহেল জানালেন, এই ঝুম বৃষ্টিতে রেইনকোটেও লাভ হয় না। বৃষ্টিতে ভিজে যেতে হয়। আর কতটা সময় দাঁড়িয়ে থাকব ফ্লাই ওভারের নিচে। অফিসে তো অনেক কাজ পড়ে আছে। তাছাড়া অফিসে পৌঁছতে লেট হলে বেতন কাটার শঙ্কাও রয়েছে।  

রাজধানীর শ্যামপুর,কদমতলী, ধোলাইপাড়, জুরাইন এলাকার মুরাদপুর, মেডিকেল হাইস্কুল রোড,পোকারবাজার,বৌবাজার,মাদ্রাসা  রোডসহ কিছু কিছু রাস্তা সারা বছরেই পানিতে ডুবে থাকে। কিন্তু গত দুইদিনের প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তার পানি উপচে দোকানপাট ও বাসা বাড়িতে ঢুকে পড়েছে।  

ফলে দোকানের অনেক মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে যায় এবং ঘরে হাটু পানি হওয়ায় ঘরের আসবাবপত্র সব ভিজে যায়।  

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর রাস্তা সংস্কার না হওয়ার কারণে ড্রেনেজগুলে ময়লায় ভরে গেছে। সিটি কর্পোরেশন ও এলাকার কাউন্সিলরসহ লোকজনের গাফলতির কারণে আজ আমরা পানিতেই বসবাস করছি অনেক বছর। আর এই ভারী বৃষ্টিপাতে আমাদের যা ক্ষতি হবার তো হচ্ছেই।

উল্লেখ্য, দেশের ওপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে। সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টিরও আভাস রয়েছে। এর প্রভাবে কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টির তীব্রতা কমে এলেও আগামী অন্তত এক সপ্তাহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে। আর রাজধানীতে আজ শনিবার বিকেলের পর থেকেই বৃষ্টির তীব্রতা কমে আসতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২৪
এসসি/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।