ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গুরুত্ব বিবেচনায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সমন্বয়: কেএএস মুর্শিদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
গুরুত্ব বিবেচনায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সমন্বয়: কেএএস মুর্শিদ

ঢাকা: চলমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর শতাধিক কর্মসূচি চলমান। এ অবস্থায় গুরুত্ব বিবেচনায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সমন্বয় করতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের  ‘রিট্রাসারিং দ্যা ইকোনমি অ্যান্ড মোবিলাইজিং রিসোর্স ফর ইক্যুইটিবল অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভলেপমেন্ট’ টাস্টফোর্সের চেয়ার ড. কেএএস মুর্শিদ।

 

রোববার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাংলাদেশে সার্বজনীন মৌলিক আয়ের (ইউবিআই) কার্যক্ষমতার মূল্যায়ন শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কেএএস মুর্শিদ বলেন, চলমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর শতাধিক কর্মসূচি চলমান। আগের সরকারের সময় চালু হওয়া এসব কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। সরকারের গঠিত টাস্কফোর্সে এ বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। এসব কর্মসূচি বন্ধ করার চেয়ে সমন্বয় করতে হবে।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় শতাধিক ধরণের কাজ হয়। এ সবগুলো বিচ্ছিন্ন। বিভিন্ন সময়ে এগুলো খোঁজার চেষ্টা করে মেলানো যায়নি। এগুলো নিয়ে নানা আলোচনা আছে। অতি দরিদ্র, দারিদ্রের ধরণ ঠিক করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গুরুত্ব বিবেচনা করে এগুলো সমন্বয় করা প্রয়োজন। যদিও বিষয়টি নিয়ে ট্রাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে কথা বলার সময় হয়নি।

বিএনপির জাতীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহামুদ চৌধুরী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি চালুর ব্যাপারে আমাদের কর্মসূচি আছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি মানুষের দারিদ্র বিমোচনের জন্য। এ কর্মসূচির আওতায় থাকা জনগোষ্ঠী অতি দারিদ্র সীমা থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে কি পরিবর্তন- সেটি পর্যালোচনা প্রয়োজন। গত ৫ আগস্টের পর মানুষের মনোজাগতিক পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেক প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে।

নাগরিক সংহতির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, দারিদ্র সীমার নিচে থাকা অতি দরিদ্র মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। এ সহায়তা হতে হবে ন্যুনতম মজুরের নিচে। একইসঙ্গে শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা ও উৎপাদন সমন্বিত রাখতে জাতীয় ন্যুনতম মজুরি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি রেজওয়ান বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বৃদ্ধি করতে হলে বর্তমান ট্যাক্স জিডিপির  অনুপাতে সম্ভব নয়। এটা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি দুর্নীতি দূর করতে হবে। রাজনৈতিক, সামাজিক এবং আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের পরিবর্তন করতে হবে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি এমন হওয়া উচিত হবে না, যাতে মানুষের মাঝে কর্মবিমুখ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বেড়ে যাওয়ায় কাজ হচ্ছে না। এ জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সহায়তা অবশ্যই ন্যুনতম মজুরির নিচে হতে হবে।

গত ১৫ বছর যেসব তথ্যের ওপর নির্ভর করে যা করা হয়েছে তার পুরোটাই ভুল। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সফল করতে হলে সঠিক তথ্য ও দুর্নীতি দূর করার তাগিদ দেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে একটি বাড়ি একটি খামার কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল, যা তাদের দলীয় গরিব মানুষই পেত না। আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছের সচ্ছল লোকজনকে এসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক সেলিম আল মামুন বলেন, নগদ সহায়তা অপব্যবহার হয়, এটা রোধ করে স্বাস্থ্যসেবার মতো সেবা দেওয়া যায় কিনা; এ বিষয়ে বিবেচনা করতে হবে।

এনজিও সংগঠক রত্না বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে অংশীজন হিসেবে এনজিওকে সম্পৃক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আগে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন আমরা এনজিও কর্মীরা কন্ট্রাক্টর হয়ে কাজ করবো, নাকি অংশীজন হয়ে কাজ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
জেডএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।