ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রতি সমর্থনের কথা জানান।
বুধবার (ফেব্রুয়ারি ২৬) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জাতিসংঘের মহাসচিবের চিঠি শেয়ার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টাকে পাঠানো এই চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব মূলত রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন।
চিঠির শুরুতে জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে চলমান রূপান্তর (ট্র্যানজিশন) প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের ওপর পড়া প্রভাব এবং রাখাইনে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট নিয়ে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের সঙ্গে একমত।
চিঠিতে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবর্তনের জন্যে উপযোগী পরিবেশ তৈরি করাসহ মিয়ানমারের সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক অংশীদার, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট (আসিয়ান) ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আমি আমার বিশেষ দূতের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, তিনি জাতিসংঘের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারভিত্তিক কর্মী দলকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য তার সিনিয়র কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা রাখাইন সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক ও জীবিকার সহায়তা আরও বাড়াতে পারে।
অ্যান্তেনিও গুতেরেস আশ্বাস দিয়ে বলেন, জাতিসংঘ এই ইস্যুতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করবে, যার মধ্যে জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী ও মিয়ানমারের আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারীর মাধ্যমে রাখাইনসহ মিয়ানমারে নিরাপদ, দ্রুত, টেকসই ও বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
গুতেরেস আশা প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন বিশ্বব্যাপী নতুন করে মনোযোগ আকর্ষণ এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য আরও বিস্তৃত সমাধান বের করতে সাহায্য করবে।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের ব্যবস্থা কীভাবে প্রক্রিয়াটিকে সর্বোত্তম সমর্থন করতে পারে তা বোঝার জন্য সদস্য রাষ্ট্রের পরামর্শ অনুসরণ করে আমরা সম্মেলনের সম্মত ফলাফল এবং পরিকল্পনার জন্য অপেক্ষা করছি।
এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে অধ্যাপক ইউনূসের পাঠানো চিঠির জন্য ধন্যবাদ দেন জাতিসংঘ মহাসচিব। যা ৭ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান তাকে পৌঁছে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫
এমইউএম/এসআইএস