ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজাকারের তালিকায় বরিশালের ২৬ পুলিশের নাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
রাজাকারের তালিকায় বরিশালের ২৬ পুলিশের নাম

বরিশাল: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত রাজাকার তালিকায় শুধু বরিশালেরই অন্তত এক হাজার জনের নাম এসেছে। এরমধ্যে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের নামও রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। এতে হতাশার পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

দীর্ঘদিন পরে হলেও রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করায় খুশি হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তবে ভুলগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্টরা।

তালিকাটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজাকারের তালিকায় তৎকালীন বরিশাল বিভাগের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি, একজন সাবেক সংসদ সদস্য, একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা, ২৬ জন সাবেক পুলিশ সদস্য, ১২ জন সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাতজন সাবেক মেম্বারসহ শিক্ষক, ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীর নাম এবং পদবি অন্তর্ভুক্তি করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগের রাজাকারের তালিকায় থাকা তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তাসহ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, পটুয়াখালী জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাবেক পরিদর্শক মো. ওবায়েদুল হক, বরিশাল জেলার বানারীপাড়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠির সাবেক পরদির্শক শাহ আলম (তালিকায় দুইবার নাম রয়েছে তার), রাজাপুর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরউদ্দিন আহমেদ, বরিশালের সিআইডি ক্যাম্পের সাবেক পরিদর্শক আবুল মোতালেব জোমাদ্দার, পরিদর্শক মো. আবু, সাবেক পরিদর্শক নজরুল ইসলাম, নলছিটির সাবেক ওসি মো. ইউসুফ আলী, সাবেক সিআইডি পুলিশ সামসুল আলম, শাহ আলম, সাবেক ওসি সেকান্দার আলী (তালিকায় দুই বার নাম রয়েছে), সাবেক কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান, উজিরপুরের সাবেক এসআই একেএম নুরুল ইসলাম, পটুয়াখালী রিজার্ভ অফিসের সাবেক এসআই এস ইসলাম, কোতোয়ালির সাবেক এসআই এমএ মান্নান (তালিকায় চারবার নাম রয়েছে), বরিশালের সাবেক টিএসআই খন্দকার আব্দুল বারি, সাবেক এসআই মান্নান, ফজলুর হক, ইসহাক, শামসুল হক, একেএম মতিউর রহমান, সাবেক এএসআই আব্দুল মাজিদ, আব্দুস সাত্তার, আজাহার আলী এবং সাবেক কনেস্টেবল আব্দুস সোবাহান ও গোলাম মাওলা।

এছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাস, সাবেক এমপি আব্দুল জলিল আকন, পাক মিলিটারির ক্যাপ্টেন আমজাত, সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর আ. লতিফ, ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা, ঠিকাদার আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মালেক, রংপুর জামায়াত ইসলামের প্রধান মোখলেছুর রহমান, (তালিকায় দুইবার নাম রয়েছে) পটুয়াখালীর সোনালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার এমএইচ খান, বাউফলের রাজস্ব সার্কেল অফিসের সাবেক প্রধান সহকারী আসমত আলী মিয়াসহ বেশ কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তার নাম রয়েছে এই রাজাকার তালিকায়।

ব্রজমোহন কলেজের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল বাকী বিল্লাহ (তালিকায় দুইবার নাম রয়েছে), মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট আরসি কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল এএইচ আমির হোসেন, কাশিপুর হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক এবিএম আমজেদ আলী, কচুয়া সাবেক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ, পিরোজপুর হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. মহিবুল্লাহ, ধামুরা হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আর্শেদ আহমেদ এবং একে ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল গণির নামও রয়েছে তালিকায়।

এছাড়াও ১২ জন সাবেক চেয়ারম্যান ও সাতজন সাবেক মেম্বার এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৬ জনসহ বেশ কতজন আইনজীবীর পদবিসহ নাম রাজাকারের প্রকাশিত তালিকায় রয়েছে।

বানারীপাড়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবুল হক বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও রাজাকারদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হওয়ায় আমরা খুশি। তবে এ তালিকায় অনেকেই বাদ গেছে। যাদের মধ্যে বড় ধরনের সংগঠকও রয়েছে। সে নামগুলো দ্রুত সংযোজন করা উচিত।

বরিশাল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এমজি কবির বুলু বাংলানিউজকে বলেন, তালিকাটি আরও বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা উচিত ছিল। তালিকায় অনেকেই রয়েছেন, যারা পিস কমিটিতে ছিলেন। স্পষ্টভাবে নাম উল্লেখ থাকলে তরুণ প্রজন্মের বুঝতে আরও সহজ হতো।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
এমএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।