ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

বসন্তের বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছে রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
বসন্তের বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছে রাজশাহী

রাজশাহী: আগুন লেগেছে ফাল্গুন। কারণ ফুলেল বসন্ত, মধুময় বসন্ত, যৌবনের উদ্দামতা বয়ে আনার বসন্ত আর আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উদ্বেলতায় মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়ার আজ প্রথম দিন।

তাই রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পয়লা ফাল্গুন বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজশাহীতে প্রাণের উচ্ছ্বাসে চলেছে বসন্ত বরণ উৎসব।  

করোনাকালের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ নিজ নিজ আয়োজনে মন-প্রাণ উজাড় করে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিচ্ছেন। শোভাযাত্রা, কবিতাপাঠ, নাচ আর গানের ছন্দে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানো হচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তকে।  

ফাল্গুনী উৎসবে তাই যেন লেগেছে স্বপ্নজয়ী তারুণ্যের ঢেউ। বরাবরের মতো বসন্তের মূল আকর্ষণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিশেষত চারুকলায়। কিন্তু করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ। তাই এবারের বসন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সেই প্রাণের স্পন্দন নেই। তবে ঐত্যিবাহী রাজশাহী কলেজের উদ্যোগে রোববার সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়েছিল এবারও।  

শুকনো পাতার মড় মড় ধ্বনি ভেঙে উৎসাহ-উদ্দীপনায় বন্ধু আর সহপাঠীদের নিয়ে রাজশাহী কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাই মেতে উঠেছে বাসন্তি উৎসবে।  

রাজশাহী কলেজ থেকে বের হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন রাজশাহী কলেজের সদ্য অবসরত্তোর ছুটিতে যাওয়া অধ্যক্ষ মুহাম্মদ হবিবুর রহমান ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল খালেক। এতে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।  

বাদ্য-বাজনার ছন্দে ছাত্রীদের হলুদ শাড়ি আর ছাত্রদের হলদে পাঞ্জাবি বরণে পুরো শোভাযাত্রা জানান দেয় আজ বসন্তের দিন। শোভাযাত্রাটি সোনাদীঘি মনিচত্বরসহ বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে রবীন্দ্র-নজরুল চত্বরে দিনভর চলছে নানা অনুষ্ঠান।  

এদিকে সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই মহানগরের বিভিন্ন বিনোদন স্পটে ঢল নেমেছে তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের। এবার বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবস একইদিনে হওয়ায় ভিন্নমাত্রা পেয়েছে বাসন্তি উৎসব। মেয়েদের পরনে হলুদ রঙের শাড়ি, খোঁপায় গাঁদা ফুল, আবার কারও কারও খোঁপায় রঙিন ফুলের রিং, কারও খোঁপায় আবার দেখা গেছে ফুলের গাজরা।

ছেলেদের পরনে হলুদ অথবা সফেদ রঙের পাঞ্জাবি। এমন বাহারি রঙের পোশাক পরে আজ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে নগর যুবাদের। ফাঁকে ফাঁকে মোবাইলের ক্ষুদ্র ক্যামেরায় উঠেছে বড় বড় সেলফি। তাদের পাশে আছে মধ্যবয়সী নর-নারী ও কোমল শিশুর দল।

সকাল থেকে রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, জিয়া পার্ক, বড়কুঠি পদ্মাপাড়ে, টি-বাঁধ, ভদ্রার শহীদ মনসুর রহমান পার্ক, পদ্মা গার্ডেনসহ অন্য বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে উপচেপড়া ভিড়। কেউ বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে, কেউ প্রিয়তম, আবার কাউকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। বিকেলে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঢল নামবে।
 
এদিকে মহানগরে আজ শোভাযাত্রা, আবির ও ফুলের প্রীতিবন্ধনীর পাশাপাশি নাচ ও গানের আয়োজন চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। মহানগরের ফুদকিপাড়া উন্মুক্ত মঞ্চসহ বিভিন্ন স্থানে এজন্য নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি টহল দিচ্ছে র‌্যাব সদস্যরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।