ঢাকা: সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউন চলাকালে পুরোদমে চলবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। চলমান কাজে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
রোববার (৪ এপ্রিল) ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এম এ এন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। জাপান থেকে দেশে এসেছে মেট্রোরেল সেট। লকডাউনে প্রকল্পের সব কাজ আগের মতো চলমান থাকবে। লকডাউনের কোনো প্রভাব প্রকল্পে পড়বে না।
ডিএমটিসিএল জানায়, দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণ কাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৫৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৩ দশমিক ২৭৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে ১৬ দশমিক ৯০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। ভায়াডাক্টের উপরে ১০ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক প্লিন্থ কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। রোড কাম রেইল ভেহিক্যাল ব্যবহার করে ডিপোর অভ্যন্তরে এবং ভায়াডাক্টের উপরে ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ডিপোর অভ্যন্তরে ৬ কিলোমিটার ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৪২ শতাংশ, দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৫৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
সূত্র আরও জানায়, উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ছাদ নির্মাণের কাজ চলছে। উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ কাজ সমাপ্ত। উত্তরা উত্তর স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। উত্তরা উত্তর ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনে স্টিল স্ট্রাকচার ইরেকশন কাজ চলমান। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনে বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন এবং স্টেশন কন্ট্রোলার কক্ষ নির্মাণ কাজ চলমান। মেট্রোরেল নির্মাণে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেই বিবেচনায় পাঁচটি লং স্প্যান ব্যালান্স ক্যান্টিলিভারের মধ্যে তিনটি সমাপ্ত হয়েছে।
ঢাকার যানজট নিরসন ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে ২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ৬টি করে কার। যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় একশো কিলোমিটার বেগে ছুটবে এ ট্রেন। উভয়দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার মধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২১
এমআইএস/এমজেএফ