ঢাকা: সরকারের দেওয়া দু’টি ছবির চিত্রই বলে দিচ্ছে গতবছর কেমন ছিল লকডাউন। রাস্তা ছিল একেবারেই ফাঁকা।
সারাদেশে সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য করোনা সংক্রমণ রোধ করা। এবারের লকডাউনে সড়কে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। গণপরিবহন আর সড়কের পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া এবার সবই খোলা।
গতবছর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় মানুষ প্রথম দিকে ঘর থেকে বের হয়নি। কিন্তু এবার হয়েছে তার উল্টো।
‘করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ’ শিরোনামের মন্ত্রিপরিষদ রোববার (৪ এপ্রিল) প্রজ্ঞাপন জারি করে। ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত প্রতিপালনের জন্য প্রজ্ঞাপনে ১১টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও অফিস-আদালত খোলা রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে।

সরকারি অফিসগুলো তাদের জনবল সীমিত করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লোকবল অফিসে নিয়ে এলেও বেসরকারি চাকুরেদের সকালে অফিসে যেতে নাজেহাল হতে হয়। গণপরিবহন না পেয়ে রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা বা সিএনজি অটোরিকশায় চড়া দামে অফিসে এসেছেন অনেকেই।
গতবছর লকডাউনের শুরুতে রাজধানীর পাড়া-মহল্লার দোকানপাটও বন্ধ ছিল। এবার সকাল থেকেই খুলেছে সে সব দোকানপাট। নিত্যপণ্য ছাড়াও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা দেখা গেছে।
পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় সকালে সাধারণ মানুষের জটলা দেখা গেছে। রায়সাহেব বাজার, বংশাল, গুলিস্তানে মানুষের জটলা ছিল চোখে পড়ার মতো।
জিরোপয়েন্টে গতবছর সরকারিভাবে পিআইডি থেকে যে ছবি দেওয়া হয় তার সঙ্গে এবছরের প্রথম দিনের চিত্র ভিন্ন। শাহবাগের চিত্রটাও তেমন।
যদিও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলছেন, সড়কে গণপরিবহন না থাকায় মানেুষের চলাচল সীমিত ছিল, মানুষের আনাগোনা ছিল না। কিন্তু বাস্তবে তার ভিন্নটাই দেখা গেছে রাজধানীজুড়ে।
এবার রাজধানীতে রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলো সচল। উবার, পাঠাওয়ের মতো সেবার পাশাপাশি ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালকরা ক্ষ্যাপ মেরেছেন। দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য বিক্ষোভও হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এও বলেছেন, মানুষকে ঘরে থাকতে হবে, প্রত্যেককেই সহযোগিতা করতে হবে, সংক্রমণ যাতে করে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এবার আমরা দেখছি সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে সবাইকেই সংযত আচরণ করতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এবছর সচিবালয়ের চিত্রও ভিন্ন দেখা গেছে। সব মন্ত্রণালয়েই সীমিত জনবল দিয়ে খোলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যে লকডাউন তা আর বাড়বে কিনা- সেটি আগামী বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত হবে বলে সচিবালয়ে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২১
এমআইএইচ/এএ