খুলনা: কালবৈশাখী ঝড়ে খুলনার কয়রা উপজেলায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোববার (৪ এপ্রিল) বিকেলে হঠাৎ কালবৈশাখীর ঝড়ের পর দুধভরা ধান শুকিয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।
ঝড়ে কয়রায় মহারাজপুর বিলের কয়েকশ বিঘা জমির বোরো ধান নষ্ট হওয়ায় হারিয়ে গেছে কৃষকের মুখের হাসি। প্রবাদে আছে, শিষ দেখলে বিশ দিন অর্থাৎ, ধান গাছের শিষ বের হওয়ার বিশ দিন পর ধান কাটা যায়। কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় কালবৈশাখীর গরম ঝড়ো হাওয়ায় মহারাজপুর গ্রামের কৃষকদের আর বিশ দিন পর ধান কাটা হলো না।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বিলের কয়েকশ বিঘা জমির বোরো ধানক্ষেত ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে সবুজের পরিবর্তে সাদা হতে দেখা গেছে। ঝড়ের বাতাস ছিল প্রচণ্ড গরম। ওই বাতাস বিলের যে এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সে এলাকার দুধভরা ধান নষ্ট হয়েছে।
তারা আরও জানায়, সোমবার সকালেও বুঝতে পারিনি এমনটা হবে। অতঃপর রৌদ্রের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সবুজ ধানক্ষেত সাদা হতে শুরু করে। তারা ধানক্ষেতে গিয়ে দেখতে পান দুধভরা ধান শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে।
মহারাজপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার ৪ বিঘার বোরো ধানক্ষেত রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সবুজে ভরা ছিল এবং মাত্র ১২ ঘণ্টার পর সেই ক্ষেত এখন খড় কুটোর মতো সাদা দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার মতো এই বিলে অনেক কৃষক লোন নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছে। কিন্তু সকাল ১০টার পর মাঠে এ দৃশ্য দেখে অনেকের হাসির পরিবর্তে চোখের পানি ঝরছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনর রশিদ বলেন, ধান গাছে শিষ বের হওয়ার পর দুধভরা অবস্থায় ৩৫ ডিগ্রির উপরে বাতাসের সঙ্গে তাপমাত্রা থাকায় ধানের শিষ নষ্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, বাতাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় তাপমাত্রার কারণে দুধভরা শিষের ফুল পড়ে যাওয়ায় পরদিন রোদের তাপে সম্পূর্ণ শিষ শুকিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন সরেজমিনে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত মাঠ ঘুরে জানান, প্রায় ৪ থেকে ৫শ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে।
তবে তিনিও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সুরে বলেন, অতিমাত্রায় গরম বাতাসের কারণে এমনটা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২১
এমআরএম/এএ