ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

পাঠকরাই যখন সংবাদকর্মী ।। তারিন হোসেন

নির্বাহী পরিচালক, দৈনিক ইত্তেফাক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪
পাঠকরাই যখন সংবাদকর্মী ।। তারিন হোসেন

কিছুদিন আগেও সংবাদ সংগ্রহের একমাত্র মাধ্যম ছিলো সংবাদপত্র। আপনি সংবাদপত্রের নিয়মিত পাঠক না হলেও নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে, সংবাদ সংগ্রহের উত্সগুলো একেবারেই বদলে গেছে।

প্রচলিত রিপোর্টিং-এর চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়া; যেমন: ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব এবং ব্লগ সাইটগুলো পাঠকদের সংবাদের অনেক কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে। আরব বসন্তের কথাই ধরুন, এই আন্দোলনটি তো শুরুই হলো ফেসবুকের মাধ্যমে।

কোনো সন্ত্রাসী হামলা অথবা ওসামা বিন লাদেনের বাড়িতে মিলিটারি অপারেশনের খবর আমরা প্রথম জানতে পারি ঘটনাস্থলে থাকা মানুষদের টুইট এবং অ্যামেচার ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে। এখন এগুলোই নিউজ ব্রেক করার দ্রুততম মাধ্যম। আর তাই এখন টিভি চ্যানেল আর অন্য সংবাদমাধ্যমগুলো  প্রতিনিয়ত বড় হতে থাকা অনলাইন কমিউনিটিকে কাছে টানতে সোশ্যাল মিডিয়াকেও তাদের পরিকল্পনায় যোগ করেছে।

সত্যি কথা বলতে, “ইন্টারনেট” সংবাদ জগত্টাকে একদম বদলে দিয়েছে। সাংবাদিকতা এখন অনেক বেশি সৃজনশীল, অনেক  বেশি সমাজ সম্পৃক্ত। এখনকার পাঠকদের সাথে সংবাদের সম্পর্ক অনেক নিবিড়। তারা এখন শুধু সংবাদ পড়ছেনই না, মন্তব্যও করছেন। সবার সাথে শেয়ার করছেন। কখনো কখনো খবর তৈরিতেও ভূমিকা রাখছেন।

ফেসবুক, টুইটার, গুগল, ব্লগ সাইটগুলো সংবাদে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন শুধু রিপোর্টাররাই সংবাদ সংগ্রহ করে উপস্থাপন করেন না, পুরো প্রক্রিয়াটিতে পাঠক এবং বিভিন্ন সোর্স তাদের মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সংবাদ তৈরিতে সাহায্য করেন।
mobile_banglanews
এক অর্থে, পাঠকেরা এখন সংবাদ তৈরি ও সম্প্রচারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেক ক্ষেত্রে তারা একজন রিপোর্টারের মতই সংবাদের সাথে যুক্ত থাকেন। এর একটা দারুণ উদাহরণ হলো ব্লগিং। ব্লগিং সাংবাদিকতার বাইরের মানুষদেরও সংবাদের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। যারা আগে পাঠক ছিলেন তারাই এখন নিজেদের মতামত তুলে ধরছেন, তৈরি করেছেন “সিভিক জার্নালিজমের” নতুন ধারা।

সোশ্যাল মিডিয়া, যেকোন সংবাদমাধ্যমের জন্য বিরাট সম্পদ হতে পারে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্রুত প্রসার চোখে পড়ার মত। এদেশে ৩ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট গ্রাহক এবং ১১ কোটিরও বেশি মোবাইল ব্যবহারকারী আছেন। প্রায় ৬৪টি জেলাতে থ্রি-জি সুবিধা চালু হয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকারী সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ অন্যতম। আগের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ মোবাইলে এবং ইন্টারনেটে খবর পড়ছেন। আর এই সংখ্যাটা দিনে দিনে বাড়ছে।

এখন সাধারণ মানুষের অনেকেই পুরো সংবাদ প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সময়ের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রসার আরও বাড়বে, ইতোমধ্যেই সমাজের সব ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছে এবং এই প্রভাব আরও বাড়বে। যে সব সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিক এই নতুন বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছেন, তারাই সফল হয়েছেন। নতুন বাস্তবতা হলো—আপনি কখনোই অফলাইন থাকতে পারবেন না, তাই এখনই লগইন করুন। দৈনিক ইত্তেফাক থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।