ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আমীর খসরু ও তার স্ত্রীসহ ৫ জনের নামে দুদকের মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
আমীর খসরু ও তার স্ত্রীসহ ৫ জনের নামে দুদকের মামলা

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১ -এ মামলাটি দায়ের করেন উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার।

মামলার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম, তার ভায়রা গোলাম সরোয়ার, শ্যালিকা সাবেরা সরোয়ার (নীনা) ও রাজউকের নকশা অনুমোদন শাখার ইন্সপেক্টর আওরঙ্গজেব নানু।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন বনানী এলাকার ১৭ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর প্লটটি ডেভেলপ করার নামে উক্ত প্লটের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ২৫ নম্বর প্লটটি নিয়ে অনুমোদিত নকশা না মেনে উভয় প্লটে যথাক্রমে ২২ তলা ও ২১ তলা ভবন নির্মাণ শেষে পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, তারা পরস্পরের সাথে যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একে অপরের সহায়তায় নিজেদের লাভবান করতে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার অপরাধ করেছেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম উভয়ই ঢাকাস্থ বনানী এলাকার ১৭ নম্বর রোডের ২৭ ও ২৫ নম্বর প্লটে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন্টারন্যাশনালের শেয়ার হোল্ডার ছিলেন।

দুদক সচিব মাহবুব হোসেন জানান, রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী মিসেস তাহেরা খসরু আলম যৌথভাবে তার ভায়রা-ভাই গোলাম সরোয়ার এবং শ্যালিকা সাবেরা সরোয়ার নীনার সঙ্গে হোটেল সারিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি গোপন করে গেছেন। এ ছাড়াও আসামি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার ভায়রা আসামি গোলাম সরোয়ার বনানী ১৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর প্লটটি যা বসতি টাওয়ার নামে পরিচিত, সেটি যৌথ নামে অ্যাকুয়ার করে রাজউকের অনুমোদিত ১৫ তলা নকশার স্থলে ২১ তলা ভবন নির্মাণ করেন।

মামলার প্রাথমিক অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, ১৯৯৫ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আসামি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য ঢাকায় সিএসই ভবন নির্মাণের প্রয়োজনে রাজউক থেকে ঢাকার বনানী বাণিজ্যিক এলাকার ১৭ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর প্লটটি নিলামে কেনা হয়। ১৯৯৯ সালে ৭৫ নম্বর বোর্ড সভায় একটি বেজমেন্ট ও পাঁচটি ফ্লোর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে দেওয়ার শর্তে ডেভেলপার খসরুর ভাযরা ভাই গোলাম সরোয়ারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের সিদ্ধান্ত হয়।

ঘটনার ২১ বছর পর দুদকের এই মামলা রাজনৈতিক চাপ কিংবা উদ্দেশ্য প্রণোদিত কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দুদক সচিব বলেন, ঘটনা পুরোনো হলে কী হবে, দুদকে যদি অভিযোগ না আসে! দুদকে অভিযোগ আসার পর দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পাওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২

এসআর/এসএমএকে/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।