ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি

ঢাকা: সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবি করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সোমবার (১৫ মে) বিকেলে পল্টন মোড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করা, গ্রাম-শহরের শ্রমজীবী মানুষকে স্বল্পমূল্যে রেশন দেয়া এবং নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনে দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এ দাবি করা হয়।

বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবির সভাপতি কমরেড মো. শাহ আলম, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী) নেতা কমরেড মাসস নন্দী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি কমরেড আব্দুল আলী।

সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন। এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স, সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য জুলফিকার আলী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য এস. এম. এ সবুর।

সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারা দেশে বাজারে আগুন জ্বলছে। চাল-ডাল-সবজি, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন থেকে শুরু করে সব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। দেশের বিপুল অংশের শ্রমজীবী মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। গোটা বাজার আজ গুটিকয়েক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। আবার সরকারের মন্ত্রীদের নানা বক্তব্য এই ব্যবসায়ীদের লুটপাটের ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করছে।

এ অবস্থায় তারা অবিলম্বে সারাদেশে গ্রাম-শহরের শ্রমজীবী মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশন দেওয়ার দাবি জানান।     

বাম জোট নেতারা বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাটের দায় জনগণের কাধে চাপিয়ে দিতে সরকার দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি করছে, ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রশ্রয়ে খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে, শিক্ষা-চিকিৎসার খরচও আকাশছোঁয়া। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে না, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের মৃত্যু ঘটছে, ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। কর্মস্থলে নিরাপত্তা নেই, প্রতিনিয়ত শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে।

সমাবেশ থেকে আরও বলা হয়, বোরো ধান কাটা প্রায় শেষ, কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। অথচ সার, কিটনাশক, বীজ, সেচের খরচ দফায় দফায় বাড়ছে। দেশের বাইরে টাকা পাচারের চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ পাচ্ছে, কিন্তু অভিযুক্তরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। টাকা পাচার, ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্প, আর দুর্নীতির কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে আর তার দায় চাপানো হচ্ছে জনগণের কাধে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলে নানা বাহবা নেওয়া হলেও আজ সারা দেশে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন দুর্বিসহ। বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে, কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাচাঁমাল নেই।

বর্তমানে দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ দিনাতিপাত করছে বলে জানান বাম জোটের নেতারা। এই পরিস্থিতি বদলাতে ব্যবসায়ী তোষণকারী সরকারকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তারা।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এদিন মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ এবং দুঃশাসন অবসানের দাবিতে বাম জোট, বাংলাদেশ জাসদ ও ঐক্য ন্যাপ যুগপথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
আরকেআর/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।