ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সন্দেহটা কোথায়, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্ন ফখরুলের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
সন্দেহটা কোথায়, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্ন ফখরুলের বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সন্দেহ করছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচিত হয়ে এলে আমরা একা দেশ চালাবো না, আমরা একটি জাতীয় সরকার গড়ে, যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ চালাবো। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় ফখরুল এ কথা বলেন।  

অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য চান উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক, তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হব। আমরা চাই না, শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আমরা চাই না, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক।  

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা, গণতন্ত্রের জন্য স্পেস তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা মাধ্যমেই তো আমরা সংস্কারের ৩১ দফা তুলে ধরেছি। এখন নতুন যারা এসেছেন তারা একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারা তো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাও নেই। আসলে রাজনীতি তো একটি সায়েন্স; এজন্যই তো বলা হয় পলিটিকাল সায়েন্স। বিএনপি কি ক্ষমতার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? না; দ্রুত নির্বাচন দিলেই দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।  

স্বৈরাচার এরশাদকে হটানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার পার্লামেন্টারি গভর্নমেন্ট ঘোষণার মধ্য দিয়েই স্বৈরাচার এরশাদকে সরানো গেছে। শেখ হাসিনা যখন কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট বাতিল করলেন, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। এটা তো সত্য? কেন পারলাম না? ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। তবে ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা দিয়েছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে আমাদের।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের ইন্টিলিজেন্সের ভেতরে কী কোনো তথ্য ছিল না? তারা কি এর ব্যবস্থা আগে নিতে পারতো না? আসলে গভর্নমেন্টটা এখনো স্ট্যাবল হতে পারেনি। তাই বলছি, নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দিন, একটি রোডম্যাপ ঘোষণা দিন, কবে কী করবেন জানান। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছেন, অনেকে বলাবলি করেন; এজন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে করে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে।  

‘সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। আমি বলতে চাই, যেকোনো একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবে, তারা করবে। ’

দেশের শিক্ষা কাঠামোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আমরা কী সাফল্য অর্জন করেছি শিক্ষাখাতে? বিশ্বের এক হাজার ইউনিভার্সিটির তালিকার মধ্যে আমাদের একটি ইউনিভার্সিটির নাম আসে না। এর কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি না। আর দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছেন শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছর শেষ করেছেন তিনি। এখন আমাদের দরকার ইস্পাত কঠিন ঐক্য।  

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএসপিপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি ড. হারুন আল রশীদ, প্রফেসর ড. আবু আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।