ঢাকা, সোমবার, ১৬ চৈত্র ১৪৩১, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০০ শাওয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফ্যাসিবাদী শক্তি ইনক্লুসিভ নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না: আখতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৫
ফ্যাসিবাদী শক্তি ইনক্লুসিভ নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না: আখতার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন

রংপুর: গণতন্ত্রকামী কোনো দেশে ফ্যাসিবাদী দলকে রাজনীতি করতে দেওয়া হয় না উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ইনক্লুসিভ নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না। আমাদের দাবি, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে এবং তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা রংপুর-৪ আসনের পীরগাছা উপজেলায় যাওয়ার পথে শহরের মাহিগঞ্জ এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আখতার এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা আছে। এই ফ্যাসিবাদী, এই একনায়কতান্ত্রিক ও অগণতান্ত্রিক সংবিধানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসনকাঠামো পরিচালিত হোক, এটা আর দেশের মানুষ চায় না।

এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির যোগসাজশে বিগত তিনটি ডামি নির্বাচন হয়েছে, প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই দল দুটির ফ্যাসিবাদের কারণে দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের আবহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে দেশ ও জনগণ। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘকাল থেকে ফ্যাসিবাদের যাতাকলে পিষ্ঠ ছিল, তার পেছনে সব থেকে বড় শক্তি ছিল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশে ২০২৪ সালে যে গণহত্যা হয়েছে, তার মদদদাতা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও তার দোসর জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশের পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডসহ সব গণহত্যার সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং এর নেতা-কর্মীরা জড়িত। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দেয়, যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে, এই শক্তি কোনোভাবে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়।

‘গণতন্ত্রকামী কোনো মানুষ, কোনো দেশ কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী দলকে রাজনীতি করতে দেয় না। সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি, কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ইনক্লুসিভ নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না। আমাদের দাবি, দল হিসেবে আওয়ামীলীগের বিচার করতে হবে, নিষিদ্ধ করতে হবে। ’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন দলটির প্রস্তুতি নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠকেরা সারা দেশে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন। তারা দেশের মানুষের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। আমরা আশাবাদী, অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি সেগুলো পূরণ করতে পারবে।

এনসিপির মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই বলেও দাবি করেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তার ভাষ্য, গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্বের সবাই এই দলের হাল ধরেছেন। এটি একক কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়।

জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক ভাষণে আগামী ডিসেম্বর অথবা জুনের মধ্যে যে নির্বাচন করার কথা বলা হয়েছে, সেটি নিয়েও কথা বলেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, সরকারের তরফে যদি সদিচ্ছা থাকে, এই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করা সম্ভব। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যদি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান করে নির্বাচনের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব নির্বাচিত হওয়ার পর আজ প্রথমবারের মতো নিজ এলাকা রংপুরে আসেন আখতার। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর শহরের সাতমাথা থেকে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে ভ্যানযোগে পীরগাছা উপজেলার হাউদারপাড়, দেউতি, সৈয়দপুর, কদমতলা, চন্ডিপুর, পীরগাছা উপজেলা সদর, নেকমামুদ, পাওটানাহাট হয়েছে কাউনিয়া উপজেলার রতনপুর, ভায়ারহাটসহ কয়েকটি জায়গায় জনসংযোগ শেষে টেপামধুপুর বাজারের কারবালা মাঠে যান, যেখানে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন ছিল।

এসময় এনসিপির কেন্দ্রীয়, রংপুর বিভাগ, জেলা ও স্থানীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।