ঢাকা, রবিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে রয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন ও ড. ইফতেখারুজ্জামান। এনসিপির পক্ষ থেকে থেকে রয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসেল।

সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হয়েছে। দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আপনাদের (এনসিপি) অকুতোভয় সংগ্রাম, প্রাণ বাজি রেখে লড়াই। আপনাদের সাথীরা প্রাণ দিয়ে হলেও একটি ফ্যাসিবাদী শাসককে পরাস্ত করতে পেরেছে। ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়ন করতে বাধ্য করেছে। দীর্ঘদিন ১৫ বছর ধরে যে শাসন আমাদের বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো বসেছিল।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কারণে রাষ্ট্র সংস্কারের বর্তমান কার্যক্রম চলা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আজকে এখানে কথা বলতে পারছি, এক সঙ্গে বসত পারছি, তা সম্ভব করে তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আজকের নেতৃত্বের আন্দোলনের কারণে। সে কারণে আপনাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ইতিহাসের অংশ হিসেবে জাতি আপনদের মনে রাখবে। ইতিহাসের উজ্জ্বল অধ্যায় তৈরি করেছেন।

সূচনা বক্তব্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আজকে বৈঠকে বসার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। যে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসককে পালাতে বাধ্য করেছিল দেশের জনগণ। হাজারো মানুষের শাহাদাত বরণ ও আহত হওয়ার বিনিময়েই আজকের এই প্রেক্ষাপট। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি। যে দলের প্রধান শক্তি ও ভিত্তি এই দেশের তরুণরা। সেই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে আমাদের যে বক্তব্য - ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এই গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তন নয়, ক্ষমতা থেকে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনা ছিল না। বরং কীভাবে রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার রক্ষা করবে এই রকম একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ছিল।

ছবি: জিএম মুজিবুর

তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যে সুপারিশ আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেগুলোতে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা একমত হয়েছি। যেসব জায়গায় আমরা আংশিক একমত বা দ্বিমত হয়েছি সেখানে আমরা আমাদের সুপারিশ সংক্ষিপ্তভাবে দিয়েছি। আজকে হয়তো বা আমরা বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ পাব। সেই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।  

এর আগে গত ২৩ মার্চ সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিতভাবে দলীয় মতামত জমা দেয় এনসিপি। পরে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া স্প্রেডশিটে থাকা ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১৩টি প্রস্তাবে পুরোপুরি একমত হয়েছি আমরা। ২৯টি প্রস্তাবে আমরা আংশিক একমত হয়েছি এবং ২২টি প্রস্তাবে একমত হতে পারিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।