ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

ইফতারে তৃষ্ণা মেটাতে বাড়ছে আখের রসের চাহিদা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২২
ইফতারে তৃষ্ণা মেটাতে বাড়ছে আখের রসের চাহিদা

বরিশাল: বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলাতেই গরমের তীব্রতা দিনে দিনে বাড়ছে। আর এমন অবস্থায় দিনভর রোজা রেখে ইফতারের সময় রোজাদারদের কাছে সুপেয় পানি, সুস্বাদু বিভিন্ন ফলের হালকা শীতল জুসের পাশাপাশি আখের রস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।



চাহিদা অনুযায়ী আমদানি থাকায় নগরজুড়ে বিক্রেতারও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে আখের রস বিক্রি করছেন।  

বরিশাল নগরের প্রাণকেন্দ্র বিবির পুকুরের পাড় ঘেঁষে বেশ কয়েকজন আখের রস বিক্রেতা রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন শামীম।  তিনি জানান, গরমের কারণে রোজার আগ থেকেই আখের রস বিক্রি ভালো হচ্ছিল। এখন রমজান শুরু হওয়ায় দিনভর তেমন একটা বিক্রি না হলেও, ইফতারের সময় ভালোই বিক্রি হয়।

তিনি বলেন, মূলক প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি ও শীতল হওয়ায় আখের রস রোজাদারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ রস পানের মধ্য দিয়ে একটা আলাদা অনুভূতি পায় রোজদাররা। যখন মেশিনের মাধ্যমে আখগুলোকে চেপে রস বের করা হয়, তখন তার সঙ্গে কিছুটা বরফ ও লেবুর রস দিয়ে দেওয়া হয়। এতে রসের স্বাদ আরও বেড়ে যায়। তবে, বরফ ছাড়াও রস কিনে নিয়ে যান অনেকে।

তিনি বলেন, বরফের কারণে আখের রসের দামে হেরফের হয়, যেমন বরফ ছাড়া প্রতি লিটার রস ১শ টাকা, আর বরফ দেওয়া রস ৮০ টাকা, আবার বরফ ছাড়া প্রতি গ্লাস রস ২৫ টাকা, আর বরফ দেওয়া রস ২০ টাকায় বিক্রি করছি আমরা।

নগরের বান্দরোড এলাকার আখের রস বিক্রেতা বিপ্লব বলেন, এবারে আখের আমদানি ভালো রয়েছে, সেসঙ্গে দামটাও মোটামুটি। তাই আগে যেভাবে রসের দাম রাখা হতো, এখনও সেরকম রাখা হচ্ছে। আর গরমকালের রমজানে ক্রেতাও ভালো রয়েছেন।

উল্লেখ্য অধিক লাভজনক হওয়ায় দিনে দিনে বরিশালে আখ চাষে কৃষকদের সংখ্যা বাড়ছে।

কৃষকদের মতে, ধানের ১০ গুণ লাভ হয় আখ চাষে। তবে স্থানীয়ভাবে আখ সংগ্রহ ও চিনি কলে সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকায় আশানুরূপ দর পাচ্ছেন না তারা। অনেকে তো আখ দিয়ে গুড় তৈরি করেও বাজারজাত করছেন। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা বলছেন, ১০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করলে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় মাত্র ৩ হাজার টাকা, আর দুই মৌসুমে লাভ হয় ৬ হাজার টাকা। অথচ এই একই পরিমাণ জমিতে আখ চাষ করলে অর্ধলাখ টাকার মতো লাভ পাওয়া যায়। আবার জলাবদ্ধতা এড়িয়ে যেতে পারলে অন্যান্য ফসলের মতো আখ চাষে তেমন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।

কৃষি বিভাগ বলছে, চরের বেলে ও বেলে-দোআঁশ মাটি আখ চাষের জন্য বরিশাল অঞ্চল আখ চাষের উপযুক্ত।

অধিক লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক মো. তাওফিকুল আলম।

তিনি বলেন, গেল বছরে বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ৯৬৭ হেক্টর জমিতে আখ এর আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ৪২২ হেক্টর জমিতে ১৮ হাজার ৫৬৮ মেট্রিকটন আখ উৎপাদন হয়েছে। এ অঞ্চলে চিনি কল না থাকায় কৃষকদের আখ বাজারজাত করায় কিছুটা সমস্যার হচ্ছে। তবে, বিশুদ্ধ আখের গুড় তৈরি করে বাজারজাত করলে কৃষক লাভবান হবে বলে মত তার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২২
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।