ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালতামামি

সাফের হতাশা বাদে ভালোই কাটল

সোহানুজ্জামান খান নয়ন, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩
সাফের হতাশা বাদে ভালোই কাটল

ঢাকা: কাতার বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্য ‘ভিশন ২০২২’ সামনে রেখে এ বছর দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো বিদেশি কোচের সঙ্গে অনেক যাচাই বাছাই শেষে পূর্ণাঙ্গ চুক্তি হলো বাংলাদেশ ফুটবলের।

ডাচদের ‘টোটাল ফুটবলের’ ছোঁয়া ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যাশায় যাত্রা হলো লোডভিক ডি ক্রুইফ ও রেনে কোস্টারের। আর অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবারই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে দেশের ফুটবল ফেডারেশন বাফুফে।

অবশ্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের ফুটবলকে বেশিদূর এগিয়ে নিতে পারেননি পুরো ডাচদের নিয়ে গড়া কোচিং স্টাফ গ্রুপ। যোগ দেওয়ার পরপরই তাদের প্রথম মিশন নেপালের কাঠমান্ডুতে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ। প্রথম পর্বে ফিলিস্তিনের কাছে হেরে শুরু হলেও নেপাল ও মারিয়ানা আইল্যান্ডসকে হারিয়ে পরের পর্বে ওঠা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রুইফকে প্রথম সফলতা এনে দিতে পারেনি।

এই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে তাদের লক্ষ্য এবার যায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। এবার ভয়াবহ অবস্থা। সাবেক চ্যাম্পিয়নরা তিন ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম পর্বেই বিদায়। ব্যর্থতা খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। খেলোয়াড়দের পেশাদারিত্ব নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বাদল রায়ের নেতৃত্বে বাফুফের গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন গণমাধ্যমে। ব্যর্থতার দায় নিয়ে ডাচ ট্রেনার মোহাম্মেদ ইয়ামালি ও গোলরক্ষক কোচ কিস কালককে চলে যেতে হয়।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে হতাশার মাঝে দেশের ফুটবলে ঝলক ছিল দেখার মতো। প্রথমবারের মতো ঘরোয়‍া ফুটবলে ট্রেবল জেতে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। প্রফেশনাল ফুটবল লিগ, ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপ জেতা মারুফুল হকের শিষ্যরা আরেকটি দুর্লভ রেকর্ড অর্জনের দ্বারপ্রান্তে ছিল। সুপার কাপের ফাইনালে উঠেও মোহামেডানের কাছে হেরে এই অনন্য কীর্তি থেকে বঞ্চিত হয় রাসেল।

একই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান হারানো সাফল্য খুঁজে পায়। আগের মতো দলবদলে তেমন চমক দিতে না পারলেও ট্রেবল চ্যাম্পিয়নদের হটিয়ে শিরোপা উত্সবের মাঝে নিজেদের স্মরণীয় দিনগুলোকে মনে করিয়ে দিয়েছিল সাদা-কালো জার্সিধারীরা।

চলতি বছরে দলবদলের উত্সবে মেতেছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। আগের মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে দল সাজাতে কার্পণ্য করেনি তারা। ট্রেবল জয়ী শেখ রাসেল থেকে দলে ভিড়িয়েছে জাতীয় দলের অধিনায়ক মামুনুলকে। সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল হাইতির সনি নর্দেকে দলে নেওয়া। গতবার রাসেলকে তিনটি শিরোপা জেতানো তারকাকে আনল ধানমন্ডির ক্লাবটি। ৭০ হাজার ডলারের বিনিময়ে নতুন ক্লাবে এসে তিনি প্রতিযোগিতার সেরা তো হলেনই, ফেডারেশন কাপে দলকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন করতে মূল অবদান রাখলেন।

ডাচ কোচদের হাত ধরে উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস। তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে সহকারী কোচ রেনে কোস্টার সুযোগ করে দিয়েছেন নেদারল্যান্ডস ঘরোয়া লিগের একসময়ের জায়ান্ট দল এফসি টোয়েন্টিতে।

সবশেষে নতুন বছর আসার ক্ষণে ফুটবল পাগল এই দেশকে মাতিয়ে গেল ফিফা বিশ্বকাপের ট্রফি, রেপ্লিকা নয় আসলটি। হোটেল রেডিসনে মাত্র দেড়দিন প্রদর্শনীর জন্য রাখা ছিল। সময়টা স্বল্প বলে ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এক পলক এই ট্রফি না দেখার আক্ষেপে পুড়েছেন অনেক ভক্তরা। কিন্তু এরই মধ্যে দেশের ফুটবলের ভবিষ্যত ও বর্তমান প্রজন্মকে উজ্জীবিত করেছে খাঁটি সোনার এই ট্রফিটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৩
সম্পাদনা: ফাহিম হোসেন মাজনুন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।