ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

ফান্ড সংকটে পুঁজিবাজারে দরপতন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৮
ফান্ড সংকটে পুঁজিবাজারে দরপতন

ঢাকা: পুঁজিবাজার মারাত্মক ফান্ড সংকটে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ডিএসই ব্রোকারর্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট মোস্তাক আহমেদ সাদেক।

মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কনফারেন্স রুমে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তারল্য সংকট থেকে উত্তরণে ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) ১ শতাংশ কিংবা দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো এবং ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার লিমিটের ক্ষেত্রে সাবসিডারি কোম্পানির বিনিয়োগ, বন্ড এবং পুঁজিবাজারে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগের আওতায় না আনা এবং মার্ক টু মার্কেটের (মার্কেট প্রাইজে শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ) ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার লিমিট নির্ধারণ করা হলেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা বাড়বে।

বাজারে গতি ফিরবে।

এছাড়াও সরকারি ব্যাংক, সরকারি ব্যাংকের মার্চেন্ট ব্যাংক, সাবসিডারি কোম্পানিগুলোকে মার্কেট সাপোর্টের জন্য আহ্বান জানানো হয়।

মোস্তাক আহমেদ বলেন, বাজারে তারল্য সংকট প্রকট। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা সংকটের কারণে বাজারে চলছে দরপতন। চলমান দরপতনের সর্বশেষ তিন কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীরা সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকার পুঁজি হারিয়েছেন।
 
তিনি বলেন, বাজারে তারল্য ও আস্থা সংকট দূর করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যাংক আমানতের ঋণের অনুপাত (এডি রেশিও) কমানো, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ফান্ড বৃদ্ধি এবং পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সীমা নিয়মের পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এডি রেশিও কমানোর বিষয়টি স্থগিত করেছে। আর বাকিগুলো কেনো কিছু সুরাহা করেন নি। ফলে বাজারের এ অবস্থা।

ডিবিএ’র সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট নাছির উদ্দিন চৌধুরী।
 
বিএমবিএ’র প্রেসিডেন্ট বলেন, এই সংকট থেকে উত্তোলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) ১ শতাংশ কমিয়ে ৫ শতাংশ আনার জন্য প্রস্তাব পাঠাবো। যদি তা সম্ভব না হয় তবে দশমিক ৫০ শতাংশ কমিয়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ আনার জন্য আবেদন করবো। বর্তমানে ব্যাংকগুলোর সিআরআর ৬ শতাংশে রয়েছে।

একইসঙ্গে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজারে সাবসিডারি প্রতিষ্ঠান, বন্ড এবং পুঁজিবাজারে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বাইরে রাখার প্রস্তাব দেবো বাংলাদেশ ব্যাংকে। এছাড়াও মার্ক টু মার্কেট বেসিসে ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার গণনার প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএমবিএ’র প্রেসিডেন্ট। তাহলে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সক্ষমতা বাড়বে। তারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। পুঁজিবাজারে সব বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ দু’টি কাজ করা উচিৎ বলেও জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে নাছির উদ্দিন বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোর এডি রেশি কম। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এডি রেশিও বেশি। তার অর্থ হচ্ছে সরকারি ব্যাংকগুলোতে টাকা আছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকে তারল্য সংকটে  রয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংক এটিকে সমন্বয় করলেই পারে। তাহলে আর তারল্য সংকট থাকবে না।

এর আগে বিকেল ৩টা থেকে ডিএসইর বোর্ড রুমে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ডিএসই, বাংলাদেশ লিস্টেড কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন, লিজিং কোম্পানি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ডিবিএ’র নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন তারা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৮
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।