শরতের গা-জ্বলা রোদের দুপুরে গুমোট গরম সঙ্গে নিয়ে এলেন আইরিন। ধূলোবালি পর্যন্ত তেঁতে আছে।

undefined
অথচ মোবাইলের পর্দায় যখন ভেসে উঠলো ‘আইরিন’, শোনা গেলো- ‘আমি পৌঁছে গেছি, আপনার অফিসের নিচে’, কী শান্ত কণ্ঠ! প্রেমজাগানিয়া! কানে মোবাইল আটকে কাউকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিচ্ছিলেন। শেষ করে তাকালেন, মেলে দিলেন সেই স্বভাবজাত হাসি। কথায়, বসায়, হাঁটাচলায় নেই একটুখানি ক্লান্তি, নেই অস্থিরতাও। খুব শান্ত, সংযমী।

airin
শুধু এটাই তো নয়। বহুক্ষণ ধরে, কড়া রোদে, ক্যামেরার সামনে পোজ দিতে দিতেও আইরিন সজীব। মাঝে মধ্যে অবশ্য দু’একবার পা ধরে যাচ্ছিলো, ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট হচ্ছিলো চোখেমুখে; কিন্তু সামলে নিচ্ছিলেন পরক্ষণেই। হাসি-গল্পে কাটিয়ে দিলেন পুরো সময়। কথা খুব মাপা, গোছানো।

undefined
অথচ এই মেয়েটিকে কি-না ‘পাগল পাগল’ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে! কোথায়, কীভাবে সেটা তো দু’বছর আগেই সবাই জেনে রেখেছে; তবে ‘কতোটা পাগল’ তার উত্তর মিলবে ৯ অক্টোবর। কী হচ্ছে ওইদিন? অনেক কিছুই। যে কারণে সপ্তাহখানেক ধরে আইরিনের মাপা শিডিউল। মোবাইলে ক্রমাগত এফএম রেডিও, টিভি চ্যানেল, পত্রিকা থেকে ফোন। একটা সাক্ষাৎকার, ফটোশুট সবাই চায়। তিনিও ছুটছেন। সেই সকালে বেরিয়ে গভীর রাত অবধি। বলছেন একই কথা বহুবার, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে- ‘হলে যান। ছবিটি দেখেন। ’

airin
এতো পরিশ্রম যার জন্য, নাম তার ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল। ’ বহু আশা জড়িয়ে আছে এর সঙ্গে, অনেক মায়া। সেটা যে শুধু আইরিন এতে অভিনয় করেছেন বলে, তা তো নয়। ছবিটি এমন একটি সময়ের সঙ্গী, যখন আইরিন বললেই লোকে হুট করে চিনে ফেলতে পারতো না। চেষ্টা করছিলেন তেমন একজন হয়ে ওঠার। যার পরিচয় শুধু মডেলিংয়ে আটকে নয়, ছড়িয়ে যাবে আরও বড় হয়ে। ধানমন্ডির বাড়িটা সেই দিনগুলোর সাক্ষী, নিজের সঙ্গে নিজের সেই সংগ্রামের।

airin
এখন তো ঠিকানা বদল হয়েছে। চলে এসেছেন পান্থপথে। কালো রঙের গাড়িও সঙ্গী হয়েছে। ছুটিয়ে নিয়ে চলে শহরের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত, শহরের বাইরে। যশোরের মফস্বল শহর নোয়াপাড়া, যেখানে আইরিনের বেড়ে ওঠা, প্রথম শেখা বুলি, প্রথম স্কুল, প্রেমে পড়া; বদলেছে সেখানকার মানুষদেরও ধারণা। আগের ‘অমুকের মেয়ে’ থেকে ‘আমাদের আইরিন’-এ পরিবর্তিত হওয়ার মাঝখানের যে অধ্যায়, ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে মিশে আছে তার সঙ্গে।

airin
বছর দু’য়েকের মাথায় ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। আসছে সিনেমা হল পর্যন্ত। কোনো ক্লান্তিই তাই আইরিনকে ছুঁতে পারছে না। ছবি তোলা যখন শেষ, আলাপচারিতাও; ছবিটির পরিচালক সাইফ চন্দনের সঙ্গে মোবাইলে কথা সেরে নিলেন। এতে তার নায়ক আরজু। ট্রেলার-গান সবই ছাড়া হয়েছে। এবার শুধু মুক্তির অপেক্ষা, শুক্রবারের অপেক্ষা। ফেরার আগে আইরিন আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলেন, ‘ওইদিন আমরা প্রত্যেক সিনেমা হলে যাবো। আপনারাও আসেন। ছবিটি দেখেন আমাদের সঙ্গে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৫
কেবিএন/জেএইচ