ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

মিলেট চাষে আশাবাদী ত্রিপুরার চাষিরা

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৩
মিলেট চাষে আশাবাদী ত্রিপুরার চাষিরা

আগরতলা (ত্রিপুরা): জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ২০২৩ সালকে ‘আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তাই সারা ভারতের সঙ্গে ত্রিপুরা রাজ্যেও পরীক্ষামূলকভাবে মিলেট চাষ করা হচ্ছে।

 

মিলেটকে একসময় গরিবের খাবার হিসেবে গণ্য করা হতো। জোয়ার, বাজরা, রাগি প্রভৃতি কয়েকটি ক্ষুদ্র দানাশস্যকে একত্রে মিলেট বলা হয়। পৃথিবীর মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় হয় এ দানাশস্য। সাধারণত দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের গরিব অধিবাসীরা খাদ্যশস্য হিসেবেই এ ফসলগুলো বেশি ব্যবহার করে। পাশাপাশি ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্যগুলোতেও প্রাচীনকাল থেকে মিলেট চাষ হয়ে আসছে। এগুলো থেকে রুটি, ছাতু প্রভৃতি তৈরি করা হয়। সেসঙ্গে পশুখাদ্য হিসেবেও এ দানাশস্যগুলো ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু তারই এখন আকাশ ছোঁয়া দাম। কারণ আজকাল চিকিৎসকরা বলছেন, চাল-গমের থেকে মিলেটের পুষ্টিমূল্য অনেক বেশি এবং শরীরের উপকার হবে। তাই এখন বিশ্বজুড়ে মিলেটের চাহিদা বাড়ছে।  

ভারত সরকার ২০২৩ সালকে ‘আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তাই সারা ভারতবর্ষের প্রতিটি রাজ্যেই মিলেট চাষের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সারাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরা রাজ্য মিলেট চাষ করা হচ্ছে। যদিও ত্রিপুরার মানুষ দীর্ঘকাল ধরে জুমে অন্যান্য ফসলের সঙ্গে ফক্সটেল জাতের মিলেট চাষ করে আসছেন। যা সবার কাছে কাউন চাল নামে পরিচিত। সারা ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম জেলার মোহনপুর কৃষি মহকুমাতেও কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে মিলেট চাষ করা হয়েছে।  

মোহনপুর কৃষি মহকুমাতে বর্ষা মৌসুমে মোট ৭ হেক্টর জমিতে মিলেট চাষ করা হয়েছে। এ পরিমাণ জমির জন্য কৃষকদের মধ্যে মোট ৭০ কেজি মিলের বীজ সরবরাহ করা হয়। মোট ১২০ জন চাষির মধ্যে এ বীজগুলো সরবরাহ করা হয়। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে দুই হেক্টর জমিতে মিলেটের ফলন হয়েছে। যেহেতু এটি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই কৃষকদের মধ্যে বেশি পরিমাণ জমিতে মিলেট চাষের বিষয়ে আগ্রহ তুলনামূলক কম ছিল। কৃষকরা যাতে ছোট ছোট জমিতে চাষ করে এর ফল পেয়ে পরবর্তী সময় আগ্রহী হয় তার জন্য ছোট জমিতে চাষ করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে জানিয়েছেন সহকারী পরিচালক ড. দেবব্রত পাল।

তিনি আরও জানান, হেক্টর পিছু ১৩০০ কেজি থেকে ১৪০০ কেজি মিলের উৎপাদন হয়েছে। মিলেট বীজ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি হেক্টর পিছু চাষিদের ৬ হাজার রুপি করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ড. দেবব্রত পাল।

মোহনপুর মহকুমার তারাপুর এলাকার বাসিন্দা উত্তম কর্মকারও এ বছর প্রথমবারের মতো মিলেট চাষ করেছেন। তবে প্রথম বছরে যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে তিনি খুশি। কীভাবে চাষ করতে হয় কি পরিমাণ সার দিতে হয় তার কিছুই তিনি জানেন না। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ শুনে শুধুমাত্র গোবর সার প্রয়োগ করে চাষ করেছেন। সেসঙ্গে কৃষি দপ্তর থেকে তাকে ৪ হাজার রুপি আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।  

প্রাথমিকভাবে ফসলটি চাষ লাভজনক বলেই তার  মনে হয়েছে। প্রথমবার তাই তিনি মাত্র দেড় কাঠা  জমিতে চাষ করেছেন আগামী দিনে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে চাষ করবেন বলে জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০ , ২০২৩।
এসসিএন/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।