ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

শীতের জীর্ণতা সরিয়ে এসেছে বসন্ত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭
শীতের জীর্ণতা সরিয়ে এসেছে বসন্ত শিমুল ফুল জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আগরতলা: ষড়ঋতুর বাংলায় শীতের জরাজীর্ণতাকে সরিয়ে অপরূপ রূপে প্রকৃতিতে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। শীতের পতাঝরা মর্মর ধ্বনিকে ছাপিয়ে গাছের ডালে ডালে ফুটেছে রঙিন ফুল আর কচি পাতার সৌরভ।

বসন্তের ছোঁয়ায় পলাশ, শিম‍ুল, মান্দার বন রাঙা বধূর সাজে সেজে উঠেছে। আগুনরঙা ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে গাছপালা।

বনে বনে ফুটেছে হাজারো বুনোফুল।

সারা বছর সবার অলক্ষ্যে থাকা কোকিল পাখিও বসন্তের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ডাকছে কুহ‍ু কুহু সুরে। ঋতুরাজের রূপ দেখে মোহিত প্রাণীকূল মেতে উঠেছে মিলনের আনন্দে।

বসন্ত চিরকালই কবি সাহিত্যিকদের গান, কবিতাসহ নানা রচনা লেখার অনুপ্রেরণা জুগিয়ে এসেছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’।

প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে, বসন্ত ঋতুতে প্রকৃতি বসন পাল্টায়, আগামী বছর কেমন হবে তার নাকি আচ পাওয়া যায় বসন্তের রূপ দেখে। বাংলায় অন্য কোন ঋতুকে ঘিরে উৎসব না থাকলেও প্রতি বছরই নানা সাংস্কৃতিক দল বসন্ত উৎসবের আয়োজন করে থাকে।
পলাশ ফুল জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তার/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমতবে নগরায়নের দাপটে প্রকৃতি থেকে বসন্ত দিন দিন তার জৌলুস হারাচ্ছে। মানুষের প্রয়োজনে এখন যথেচ্ছভাবে কাটা হচ্ছে নানা প্রজাতির গাছ। এসব গাছের সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল, পলাশের মতো গাছও। আগরতলা শহরের বুক চিরে যাওয়া হাওড়া নদীর দুই পাড় সহ রাজ্যের প্রায় প্রতিটি এলাকায় শিমুল গাছ দেখা যেত একটা সময়, বসন্ত এলে গাছের তলা লাল হয়ে থাকতো ফুলের পাপড়িতে। ফুলের মধু খেতে আসা পাভির কলকাকলিতে মুখরিত থাকতো সারা দিন।  

কিন্তু এখন আর তেমন বেশি পরিমাণে শিমুল গাছ চোখে পড়ে না।   তাই চোখ ফেরালেই বসন্তের রূপ আর ততটা দেখা যায় না।

তবে আগরতলার এডভাইজার চৌমুহনী এলাকায় রাস্তার পাশে মাত্র দুটি পলাশ গাছে বেঁচে আছে এখনো। দূষণসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশে গাছ দুটি নিজেদের টিকিয়ে রেখে প্রতি বছর বসন্ত এলে জানান দেয় প্রকৃতি তার রূপ বৈচিত্র্য হারায়নি এতটুকুও।
 
কিন্তু যে ভাবে গাছ নিধন চলছে সেই সঙ্গে বায়ু দূষণ ও পরিবেশ দূষণের ফলে বৈরি আবহাওয়ার সৃষ্টি হচ্ছে এসবের কারণে আগামী দিনে বসন্তের ছিটে-ফোঁটাও থাকবে তো? তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

তবে বসন্ত ঋতুর সব কিছুই ভালো এমনটা কিন্তু নয়। হাল্কা শীত হাল্কা গরম এই পরিবেশে অন্য সবের সঙ্গে খুব দ্রুত বিস্তার ঘটায় রোগ জীবাণুও। তাই বছরের এই সময় খুব বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা যায় সর্দিকাশি থেকে শুরু করে হাম ও বসন্তের মত অসুখের। তাই এই সময় সব বয়সী মানুষের শরীরের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।

সব উৎকণ্ঠার শেষেও কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত’।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭
এসসিএন/ওএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।