ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরায় ব্লু হোয়েল আতঙ্ক, অল্পের জন্য জীবন রক্ষা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৭
ত্রিপুরায় ব্লু হোয়েল আতঙ্ক, অল্পের জন্য জীবন রক্ষা ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): ‘মরণ গেম’ ব্লু হোয়েলের থাবায় আতঙ্কে রয়েছেন ত্রিপুরার অভিভাবকেরা। রাজ্যের দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়া মহকুমার সাড়াসীমা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত এলাকায় মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা পেলেন সন্তোষ দেবনাথ (২৬) নামে এক যুবক। 

সোমবার (০৯ অক্টোবর) স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সন্তোষের দেড় বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

সন্তোষের বন্ধু প্রসেনজিৎ দেবনাথ বাংলানিউজকে জানান, গত ৫ অক্টোবর রাবার গাছের ল্যাটেক্স (তরুক্ষীর) বের করার ছুরি দিয়ে সন্তোষ তার নিজের পেটের বা দিকের বেশ কিছু অংশ কেটে ফেলেন। বিষয়টি দেখে তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বিলোনিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।  

আহত অবস্থায় হাসপাতালে সন্তোষ।  ‘হাসপাতাল থেকে কাটা অংশ সেলাই করে ওষুধ লাগিয়ে দিলে পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে যার। মাঝে একদিন ভালো থাকলেও শনিবার (৭ অক্টোবর) রাত থেকে ফের পাগলামি শুরু করেন সন্তোষ। ’

প্রসেনজিৎ জানান, কাঁচের বাটি দুই হাতে চেপে তা ভেঙে রক্তাক্ত অবস্থায় পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় তাকে ‘ভুতে ধরেছে’ ভেবে বাড়ির লোকজন রোববার (০৮ অক্টোবর) ঝাড়-ফুঁকের জন্য ওঁঝার (গ্রাম্য কবিরাজ) খোঁজে বের হন।
 
‘এরমধ্যে সন্তোষ সেলাই ছিঁড়ে ফেললে তার পেটের কাঁটা স্থান থেকে রক্ত বের হতে থাকে। চিৎকার শুনে প্রতেবেশীরা বাড়িতে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন,’ বলেন প্রসেনজিৎ।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘কি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে সন্তোষ জানান, তার রক্ত দেখতে ভালো লাগে, নিজের শরীরে আঘাত করে রক্ত বের করতে ভালো লাগে তার। এ কথা শোনার পর তার ওপর সন্দেহ হয়। পরে তার স্মার্টফোনে দেখি-একটি অ্যাপসের নিচে লেখা, গেম ওভার অ্যান্ড ক্লোজ।  

খবর পেয়ে ছুটে যায় পুলিশও।  ‘আর তখনই বুঝতে পারি সন্তোষ ব্লু হোয়েল গেম খেলেছেন এবং অবসাদগ্রস্ত হয়ে আহ্মহত্যার চেষ্টা করেন। জিজ্ঞাসা করলে সন্তোষ জানান, ব্লু হোয়েল গেমের বাংলা ভার্সনের ৫০টি পর্ব খেলেছেন তিনি। ’  

এ দিকে খবর ছড়িয়ে পড়লে বিলোনিয়া এলাকায় সন্তোষের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। ছুটে যান বিলোনিয়া মহকুমার ডেপুটি কালেক্টর (ডিসি) ফিরোজ মিঞা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) রতন কুমার দাস প্রমুখ।  

বর্তমানে বিলোনিয়া হাসপাতালে সন্তোষের চিকিৎসা চলছে বলে জানায় পুলিশ।  

এদিকে ব্লু হোয়েলের বাংলা ভার্সনের কথা শুনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের অভিভাবকদের মধ্যে। সন্তানদের হাতে থাকা স্মার্টফোন নিয়েও বেশ চিন্তিত ত্রিপুরার মা-বাবারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৭
এসসিএন/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।