ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

আগরতলার বাণিজ্যমেলায় কাবুলিওয়ালার স্টলে উপচে পড়া ভিড়

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
আগরতলার বাণিজ্যমেলায় কাবুলিওয়ালার স্টলে উপচে পড়া ভিড় আগরতলার বাণিজ্যমেলায় আফগানিস্তানের বিভিন্ন শুকনো ফল নিয়ে স্টল সাজানো মেহমুদ খান ও তার স্ত্রী। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা(ত্রিপুরা): আগরতলার শিশু উদ্যানে বেসরকারি উদ্যোগে আয়োজিত বাণিজ্যমেলায় আফগানিস্তানের কাবুল থেকে এসেছেন এক কাবুলিওয়ালা দম্পতি। আফগানিস্তানের বিভিন্ন শুকনো ফলের পসরা নিয়ে সাজানো তাদের স্টলটি মেলায় আসা দর্শকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের সঙ্গে ত্রিপুরা রাজ্যের সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই। কাবুল থেকে সেদেশের খাবার-দাবার দিয়ে আসা লোকেরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এসে ফেরি করে জিনিসপত্র বিক্রি করলেও ত্রিপুরায় তাদের কখনো দেখা যায়নি।

তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত ছোট গল্প ‘কাবুলিওয়ালা’র মাধ্যমে ত্রিপুরাবাসীর মনে একটি কাল্পনিক ছবি তৈরি হয়। এরপর বিভিন্ন সিনেমায় কাবুলিওয়ালাদের দেখে ধারণা সম্পূর্ণ হয়।  

তবে ২০২০ সালে বাণিজ্যমেলায় আগরতলাবাসী নিজ চোখে দেখলেন কাবুলিওয়ালাদের। একইসঙ্গে মেলায় তাদের স্টল এসে নিলেন আফগানিস্তানের বিভিন্ন খাবারের স্বাদ।

আগরতলার শিশু উদ্যানের বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন দেশ থেকেই ব্যবসায়ীরা এনেছেন তাদের দেশের বিবিধ বাণিজ্যিক পণ্য। এর মধ্যে কাবুল থেকে আসা মেহমুদ খান ও তার স্ত্রী আফগানিস্তানের শুকনো ফলে সাজিয়েছেন তাদের স্টল।  

প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই মেলায় ভিড় নামে তাদের দোকানে। মেলায় আসা লোকজন এক ঝলকের জন্য তাদের ও সুদুর কাবুল থেকে নিয়ে আসা নানা অজানা ফল দেখতে ছুটে যান তাদের স্টলে।

মেহমুদ খান জানান, আফগানিস্তান থেকে তিনি পেস্তাবাদাম, কাজুবাদাম, ডুমুর, কাঠবাদাম, অ্যাপ্রিকট, আখরোট, কালো আঙ্গুরের কিসমিস, গাঢ় সবুজ আঙ্গুরের কিসমিস, আফগানি খেজুর, মামরা বাদামসহ বিভিন্ন শুকনো ফল এবং কেশর, হিং, অলিভ অয়েল ইত্যাদি পণ্য নিয়ে এসেছেন।

স্টলে সাজিয়ে রাখা বাদাম ও অন্য শুকনো ফল।  ছবি: বাংলানিউজদিল্লি, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, পাঞ্জাব, গৌহাটিসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে গত পাঁচ বছর বিভিন্ন মেলায় তারা অংশগ্রহণ করছেন। তবে এবছরই প্রথম তারা আগরতলায় এসেছেন।  ভারত ছাড়াও দুবাই, রাশিয়াসহ অন্য দেশেও তাদের ব্যবসা রয়েছে বলে জানান মেহমুদ খান।

আগরতলায় প্রথম এসেছেন ব্যবসা কেমন চলছে এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, কাবুলের খাবার-দাবার সম্পর্কে এখানের বেশিরভাগ মানুষের খুব একটা স্বচ্ছ ধারণা নেই। তারপরও কৌতুহলে লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন তার ষ্টলে। ব্যবসা মন্দ হচ্ছেনা বলেও জানান তিনি।

স্টলে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন শুকনো ফল।  ছবি: বাংলানিউজবিভিন্ন পণ্যের দাম জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানান, খাবার সামগ্রী ও অন্য পণ্যে এক কেজি দু’হাজার রুপি থেকে শুরু হয়ে প্রায় এক লাখ রুপি পর্যন্ত দাম আছে।

মেলায় বেড়াতে আসা জয়া বর্ধন নামে এক নারী দর্শক বাংলানিউজকে জানান, এতদিন কাবুলিওয়ালদের নাম শুনেছেন। এখন সরাসরি তাদের দেখতে পারছেন।

তিনি জানান, সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কাবুলিওয়ালাদের বাস্তবে দেখে তিনি অভিভূত।

জয়ব্রত নামে এক ক্রেতা জানান, তিনশ রুপি দিয়ে আড়াইশো গ্রাম ডুমুর কিনেছেন তিনি। এছাড়া দোকানে কাবুলি দম্পতি তাকে বিভিন্ন ধরনের খাবারের একটি মিশ্রণ খেতে দিয়েছেন। এর স্বাদ তার কাছে দারুন লেগেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
এসসিএন/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।