ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরায় আপেল চাষির বাগানে এসেছে প্রচুর ফুল

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
ত্রিপুরায় আপেল চাষির বাগানে এসেছে প্রচুর ফুল আপেল চাষির বাগানে এসেছে প্রচুর ফুল

আগরতলা (ত্রিপুরা): কৌতূহলবশত এবং অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রিপুরা রাজ্যে আপেল বাগান তৈরি করেছেন বামুটিয়া এলাকার মিঠুন সরকার। গত বছর বাগানে প্রথম ফলন আসে।

এ বছরও আপেল গাছে প্রচুর ফুল ফুটেছে। তা দেখে মিঠুন আশায় বুক বাঁধছেন এবার আরও বেশি আপেল ধরবে।

রাজধানী আগরতলা পার্শ্ববর্তী মোহনপুর মহকুমার অন্তর্গত বামুটিয়া এলাকার যুবক চাষি মিঠুন সরকার ব্যক্তিগত উদ্যোগে আপেল বাগান করেছেন। বহি রাজ্য থেকে অপেক্ষাকৃত গরম অঞ্চলে চাষ হয় এমন বিশেষ প্রজাতির আপেলের চারা এনে বাগান গড়ে তুলেছেন। গত বছরে বাগানে আপেল ধরিয়ে তিনি গোটা রাজ্য জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। এ বছরও তার বাগানের গাছে আপেলের ফুল এসেছে।  

মিঠুন বাংলানিউজকে জানান, ডিসেম্বর মাসেই গাছের ফুল আসতে শুরু করে কিন্তু প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে ফুলগুলো ঝরে যায়। তবে পরবর্তী সময় তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাছে ফুল আসছে। এই ফুলগুলো ধীরে ধীরে ফলে রূপান্তরিত হচ্ছে। জুলাই মাস নাগাদ গাছের আপেল তোলার উপযোগি হবে বলে জানান তিনি।  

তার বাগানে মোট ১৭৩টি গাছ রয়েছে, গতবছর এসব গাছে প্রায় ৩০কেজির মতো আপেল ধরে। গত বছরের তুলনায় এবার আরও বেশি পরিমাণে আপেল ধরবে বলে তার ধারণা। কারণ গাছগুলোতে অনেক বেশি সংখ্যায় ফুল এসেছে। তবে আগামী বছর থেকে অনেক বেশি আপেল ধরবে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত বলেও জানিয়েছেন। বৃষ্টি আসার আগে এখন গাছের গোড়ায় চুনের প্রলেপ লাগিয়ে দিচ্ছেন। এতে উইপোকা এবং ফাঙ্গাসের হাত থেকে গাছগুলি রক্ষা পাবে। তিনিই প্রথম প্রমাণ করেছেন যে, ত্রিপুরা রাজ্যের মাটি ও জলবায়ু আপেল চাষের উপযুক্ত। তার বাগান থেকে অনেকেই বাড়িতে আপেল গাছ লাগানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের কথা চিন্তা করে তিনি বহি রাজ্য থেকে আপেলের চারা আনিয়েছেন। প্রতিটি চারা তিনি ৩০০ টাকা করে বিক্রি করছেন। বাগানের কাটিং করা ছাড়া এগুলোতেও ইতোমধ্যে ফুল ধরেছে। তাছাড়া তিনি নিজেও চারা উৎপাদন শুরু করেছেন। আগামী বছর থেকে তিনি তার উৎপাদিত চারা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান।  

তার বাগানকে আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি এ বছর আরও চার বিঘা জমিতে নতুন করে আপেল বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিন্তু কৃষি দপ্তর থেকে কোন ধরনের সহায়তা না পাওয়ায় বাগান বড় করতে পারেননি। এমনকি ব্যাংক থেকেও বাগানের জন্য কোনো ধরনের সহায়তা পাননি। তাই বাধ্য হয়ে মাইক্রো ফাইন্যান্স সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে বাগানের পরিচর্যা করছেন বলে জানান তিনি।

এখনো রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ তার বাগান দেখতে ছুটে আসছেন। ত্রিপুরার মাটিতে শীতপ্রধান অঞ্চলের গাছ বড় হচ্ছে ফল ধরেছে তা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করছেন অনেকেই। এদিন বাগান দেখতে গন্ডাছড়া থেকে আসা দুই যুবক জানান, আপেল গাছ কেমন হয় তা নিজের চোখে দেখতেই তারা এখানে এসেছেন।

গত বছরের তুলনায় এ বছর মিঠুন সরকারের আপেল বাগানে আরও বেশি পরিমাণে আপেল ধরবে। সেইসঙ্গে পরবর্তীতে সরকার তাকে সহযোগিতা করবেন বলে আশা ব্যক্ত করছেন সাধারণ মানুষ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২১
এসসিএন/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।