ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

ত্রিমুখী কোন্দলে জর্জরিত নাটোর-১ আসনের আওয়ামী লীগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৭
ত্রিমুখী কোন্দলে জর্জরিত নাটোর-১ আসনের আওয়ামী লীগ আবুল কালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বকুল এবং শেফালি মমতাজ

নাটোর (লালপুর ও বাগাতিপাড়া) থেকে: বর্তমান সরকারের শাসনামল তিন বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে। বছর দেড়েক পরেই একাদশ   জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। 

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে দল গোছানোর কাজ শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। সরকারি দল ও বিরোধী দলগুলোর জেলা, উপজেলা ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়েও নিরবে চলছে নির্বাচনী প্রস্তুতি।

এই প্রস্তুতির হাওয়া লেগেছে দেশের উত্তরাঞ্চলের ঐতিহাসিক জেলা নাটোরেও।

তবে নাটোর-১ আসনের অন্তর্গত দুই উপজেলা লালপুর ও বাগাতিপাড়ায় এখনো দল গোছাতে পারেনি সরকারি দল আওয়ামী লীগ। এই আসন ত্রিমুখী কোন্দলে জর্জরিত স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি। নির্বাচনের দিন যতোই এগিয়ে আসছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দলীয় কোন্দল।  

স্থানীয় এমপি ও নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বকুল এবং আওয়ামী লীগের প্রায়ত নেতা মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী ও নাটোর-১ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি শেফালি মমতাজের মধ্যে কোন্দল চলছে। ফলে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত না হয়ে বরঞ্চ দিন দিন আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতি আরো দুর্বল ও কোণঠাসা হচ্ছে।    

শুক্রবার (২৬ মে) লালপুর ও বাগাতিপাড়ার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, যেখানে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দল গোছানো দরকার, সেখানে দলীয় কোন্দলই শেষ করতে পারেনি নাটোর-১ আসনের আওয়ামী লীগ। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।

মূলত বুকল ও এমপি আবুল কালাম আজাদের মধ্যে বিদ্যমান কোন্দলই ফ্যাক্টর বলে মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকে। তারা বলছেন, যেহেতু এমপি কামালের বড় ভাইয়ের স্ত্রী শেফালি মমতাজ, সেহেতু বিষয়টি তারা পারিবারিকভাবে সমাধান করতে পারবেন। কিন্তু বকুলের সঙ্গে কামালের যে বৈরিতা রয়েছে তা চরম এবং সহসা শেষ হওয়ার নয়। কামাল এবং বকুল দু’জনই আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।  

বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জামিলুর রহমান বাবু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এই আসনে দলীয় কোন্দলের প্রধান কারণ এমপি নিজেই। তিনি দলীয় কোনো সিদ্ধান্তে স্থানীয় নেতাকর্মীদের তেমন একটা পাত্তা দেন না। তিনি নিজের মতো করে সব সিদ্ধান্ত নেন।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগাতিপাড়া উপজেলা যুবলীগের এক কর্মী বাংলানিউজকে বলেন, নাটোর-১ আসনের এমপি দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে হাইব্রিট ও বিএনপির লোকজনকে দলে টেনে আনছেন। এজন্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ।  

আবার অনেক নেতাকর্মী বলছেন, দলীয়ভাবে এমপি কামাল কিছুটা বিতর্কিত হলেও মাঠপর্যায়ে যতেষ্ট উন্নয়ন করেছেন। ফলে স্থানীয়ভাবে এখনো তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। যা আগামীতে দলীয় মনোনয়ন পেতে সহায়ক হবে।

তবে এসব কথা অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বকুল বাংলানিউজকে বলেন, রানিং এমপির কোনো জনপ্রিয়তাই নেই স্থানীয় পর্যায়ে। তিনি এখন পকেট কমিটির মাধ্যমে টিকে আছেন। শতকরা দুই শতাংশ মানুষও এখন তার পক্ষে নেই। আগামী নির্বাচনে লালপুর ও বাগাতিপাড়ার জনগণ পরিবর্তন চায়।

নির্বাচনের আগে এসব কোন্দল না মেটাতে পারলে নাটোর-১ আসন হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে সরকারি দলের। তাই দ্রুত দল গোছানোর জন্য দলের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে আছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশ সময়: ০৫০৭ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
এমএ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।