ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

জামায়াত ইস্যুতে একাট্টা তৃণমূলের ছাত্রলীগ-ছাত্রদল

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
জামায়াত ইস্যুতে একাট্টা তৃণমূলের ছাত্রলীগ-ছাত্রদল যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বড়লেখা-জুড়ী থেকে: কেন্দ্র যাই ভাবুক, জামায়াত ইস্যুতে ছাত্রলীগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন বড়লেখা উপজেলার যুবদল-ছাত্রদল নেতারা। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির সময় ‘দ্বিতীয় সাতক্ষীরা’ খেতাব পাওয়া কাঁঠালতলী ইউনিয়ন এখন সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রায় জামায়াতমুক্ত বলেই দাবি তাদের। প্রধান দুই দলের যুবনেতারাও এখানে রাজনৈতিক সহাবস্থানে। দল যাই হোক, একসঙ্গেই ওঠা-বসা করেন তারা।

তৃণমূলে রাজনীতি করা বেশি চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তারা বলছেন, ‘আমরা কোনো সহিংসতা আর চাই না। জামায়াতের সহিংসতায় সবাইকে ভুগতে হয়।

কাঁঠালতলীর ‘দ্বিতীয় সাতক্ষীরা’ আর তকমা রাখতে চাই না। এর জন্য যা করার আমরা করবো’।

ছাত্রদলের সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি ও যুবদল নেতা মুজিবুল হক খোকন বাংলানিউজকে বলেন, ‘তৃণমূলে রাজনীতির চ্যালেঞ্জ অনেক। ২০ দলীয় ঐক্যজোটের সঙ্গে জামায়াত থাকতে পারে রাজনৈতিক বিবেচনায়, কিন্তু আমাদের এখানে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি নেই। জামায়াতই শুধুমাত্র কাঁঠালতলী ইউনিয়নকে ২০১৩ সালে অস্থিতিশীল করে তুলেছিলো। এতে আওয়ামী লীগেরও দোষ আছে। এখানে বিএনপির জোর বেশি থাকায় তারা জামায়াতকে বিভিন্ন সময় ব্যবহার করেছে’।
যুবদল নেতা মুজিবুল হক খোকন/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমকাঁঠালতলী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন বলেন, ‘এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিভিন্ন সময়ে বিএনপি-জামায়াত থেকে নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। মূলত তারাই আমাদের দলে ঢুকে ক্ষতি করেছেন। এখন আমরা যতো বড় নেতাই হোক, দলে নেবো না’।

উপজেলা ছাত্রলীগের অর্থ সম্পাদক ফয়ছল আহমেদ বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি হানাহানি নেই। সবাই এখন শান্তি চান। তাই জামায়াতকে প্রতিহত করতে সবাই এখন এক। সহজে তারা এখানে আর অবস্থান পাকা করতে পারবে না’।

আওয়ামী লীগের ভালোটা ভালো বলতে দ্বিধা করেননি বড়লেখা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাক আজিজ মান্না। তিনি রাজনীতিতে তরুণদের উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভিশন হলো তরুণদের নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। প্রবীণরা অবশ্যই থাকবেন। তাদের সম্মানও করবো। কিন্তু তরুণরা প্রযুক্তির দিক দিয়ে যতোটা এগিয়ে ততোটা তারা নন। বর্হিবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে তরুণ নেতৃত্ব দরকার। তবে প্রবীণদের বাদ দিয়ে নয়’।
যুবলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম৩০০ আসনকে যদি দু’দলের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে দেওয়া যায়, তাহলে রাষ্ট্র পরিচালনার অংশ হিসেবে তরুণরা জায়গা পাবেন বলে মত তার।

তৃণমূলে কাজ করতে নাসির উদ্দিন মিঠু ও কাতারপ্রবাসী শরীফুল হক সাজুর মতো মানুষের নেতৃত্বে আসা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-১ আসন। এ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শাহাব উদ্দিনকে একজন ভালো মানুষ উল্লেখ করে যুবদল নেতা খোকন বলেন, ‘তিনি কাজ ভালো করছেন। তার সব ভালো, শুধু দলীয়করণ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি নিয়েও রাজনীতি-দলীয়করণ হচ্ছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে এতো দলীয়করণ আগে ছিলো না। এছাড়া মাধবকুণ্ডের গাছ ব্যাপকহারে চুরি হচ্ছে। সবই করছেন আওয়ামী লীগের ছোট-বড় নেতারা। সরকার ভালো করলে তাকে ভালো বলবো’।
যুবদল নেতা মুজিবুল হক খোকন ও ছাত্রদল নেতা মোস্তাক আজিজ মান্না/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমএই নেতা আরও বলেন, ‘যদি একাত্তরের কথা স্মরণ করি, তাহলে তো জামায়াতকে সমর্থন করা যায় না।   জামায়াতকে বিএনপির লজ্জা বলা হয়। আমরাও জামায়াতকে চাই না। কিন্তু আওয়ামী লীগও তো বিভিন্ন সময় ব্যবহার করেছে। আমরা জামায়াতকে বর্জন করবো। কিন্তু আওয়ামী লীগ কি এ নিশ্চয়তা দিতে পারবে যে- তারাও আর জামায়াতের কাছে ধরনা দেবে না’।

ছাত্রদল নেতা ফাহিম বলেন, তৃণমূলে রাজনীতির জন্য কমিটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কমিটিগুলো ঠিকঠাক হলে কাজও হয়।

দুই দলের নেতাকর্মীদেরই কথা, ‘জামায়াতকে কাছে ঘেঁষতে দেবো না আমরা। ছাত্রদল-ছাত্রলীগ যাই বলেন, আমরা সবাই এক আছি। কিন্তু জামায়াত না।

বিভিন্ন জাতীয় দিবসের সব অনুষ্ঠানেও দুই দলের নেতাকর্মীরা একসঙ্গে আয়োজন, পরিচালনা করেন বলেও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৭
এএ/এএসআর

** আ’লীগ নেতার অফিসেই আড্ডা বিএনপি নেতা-কর্মীর!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।