ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

দুলুর স্বৈরতন্ত্রে নাটোর-৪ আসনে নিষ্ক্রিয় বিএনপি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
দুলুর স্বৈরতন্ত্রে নাটোর-৪ আসনে নিষ্ক্রিয় বিএনপি! বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু (ফাইল ফটো)

গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম (নাটোর): নাটোর-৪ আসন গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে বড়াইগ্রাম উপজেলাতে রয়েছে দুইটি পৌরসভা। একটি বনপাড়া, আরেকটি বড়াইগ্রাম।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ আসনে বিএনপির প্রস্তুতি জানতে গিয়ে জানা যায়, আসনটিতে বিএনপি এখন অভিভাবকশূন্য; একই সঙ্গে নিষ্ক্রিয়।

এর কারণ হিসেবে স্থানীয় বিএনপিনেতারা বলছেন, বিএনপির দুই নেতা ছানাউল্লা নুর বাবুর ও অধ্যক্ষ একরামুল আলমের মৃত্যু এবং বিএনপির সাবেক এমপি মোজ্জামেল হক রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করায় নাটোর-৪ আসনে বিএনপি রীতিমতো অভিভাবকশূন্য। আর এই অভিভাবকশূন্যতাকে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজে লাগাছেন জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

জেলা বিএনপিতে নিজের একক কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য নাটোর-৪ আসন বিএনপিকে সক্রিয় হতে দিচ্ছেন না তিনি—এমন অভিযোগ নেতাকর্মীদের অনেকের।

শনিবার (২৮ মে) গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বিএনপির বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

এছাড়া বিএনপির নাটোর জেলা ও চার আসনের অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নাটোর সদর আসন এবং নাটোর-৪ আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। মূলত এই কারণে নাটোর-৪ আসনে বিএনপিকে ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্কয় করে রেখেছেন। নাটোর জেলা বিএনপিতে তার চাপিয়ে দেওয়া একক নেতৃত্বের কারণে এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পান না।

নাটোর-৪ আসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বাংলানিউজকে বলেন, শুধুমাত্র দুলুর কারণে আজ নাটোর জেলা বিএনপির এমন বেহাল দশা। নাটোর-৪ আসন বিএনপিকে তিনি নিষ্কয় করে রেখেছেন। আমরা শুনেছি, এখান থেকে এবং জেলা সদর থেকে তিনি মনোনয়ন চাইবেন। এই কারণেই তিনি নাটোর-৪ আসন বিএনপিকে নিষ্কয় করে রেখেছেন যাতে আর কেউ মাথা তুলতে না পারে।

 বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, নাটোর-৪ আসনে আজ এমনই অবস্থা যে, এসব অন্যায় ও স্বৈরতন্ত্রী আচরণের বিরুদ্ধে যে কথা বলতে যাবে সারাজীবনের জন্য তাকে রাজনীতি বাহিরে চলে যেতে হবে। অথবা হয়তো তাকে মেরে পর্যন্ত ফেলা হতে পারে। এই জন্য ভয়ে কেউ কথা বলতেও চায় না। একমাত্র জেলা বিএনপি সভাপতির ডিক্টেটরশিপের কারণেই নাটোর থেকে বিএনপির আর কোনো ভালো নেতাও তৈরি হচ্ছে না।

তিনি বলেন, নাটোর-৪ আসনে বিএনপির অনেক যোগ্য নেতা আছেন যারা আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে পারবেন। কিন্তু তারা জেলা সভাপতির কারণে কোনো দিনই প্রকাশ্যে বলতে পারবেন না মনোনয়নের কথা। এভাবে চলতে থাকলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই নাটোর-৪ আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যাবে।

গুরদাসপুর বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের উপজেলা বিএনপির একটি কমিটিও আর সক্রিয় নেই। এখানে বিএনপির নেতাদের জেলা বিএনপির সভাপতি দুলু সক্রিয় হতে দেন না। তিনি চান একক নিয়ন্ত্রণ। আর যিনিই তার বিরুদ্ধে যান তাকেই কমিটি থেকে বের করে দেওয়া হয়। তাই আগামী নির্বাচন নিয়ে আমাদেরে তেমন কোনো আগ্রহও নেই।

তারা আরও বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী নির্বাচনে বিএনপি নাটোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগকে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জই দিতে পারবে না। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে প্রচার প্রচারণা করার জন্য বিএনপির কোনো নেতাকেই পাওয়া যাবে না।

আগামী নির্বাচনে নাটোর-৪ আসনে বিএনপির প্রস্তুতি নিয়ে বরাইগ্রাম বিএনপির সভাপতি অ্যাড. আব্দুল কাদের মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় জনতার ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করেই আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া উচিৎ। একজন ক্লিন ও সৎ ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে জনগণ ভোট দিতে আগ্রহী হবে। এই বিষয়টা কেন্দ্রকে ভালোভাবে বিবেচনা করে কাজ করতে হবে। নইলে ভোটে জনগণ বিপক্ষে রায় দিতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা  মে ৩০, ২০১৭
এমএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।