ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

এমপিতে আস্থা নেই পাবনা-২ আসনে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪১ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
এমপিতে আস্থা নেই পাবনা-২ আসনে! খন্দকার আজিজুল হক আরজু

সুজানগর ও বেড়া (পাবনা) থেকে: পাবনা-২ আসন সুজানগর ও বেড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। পাবনার এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। শুধু স্থানীয় জনতার মাঝেই নয়, এই ভাটা লেগেছে দলীয় পর্যায়েও। কাছের কয়েকজন নেতা-কর্মী ছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের তেমন কোনো নেতাই আর তার পক্ষে নেই।

এর কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা কর্মীরা বলেছেন, টেন্ডারবাজি, নিজের কাছের লোকদের সুযোগ সুবিধা বেশি দেওয়া ও নির্বাচনী এলাকায় না থেকে ঢাকায় অবস্থান করাসহ বিভিন্ন কারণে অজনপ্রিয় হয়ে উঠছেন তিনি। এভাবে চলতে থাকলে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে বর্তমান এমপির বেগ পেতে হতে পারে।

  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের কোনো ধরনের মূল্যায়ন করছেন না। তার পছন্দের ও সুবিধাভোগী নেতাদের নিয়ে তিনি চলাফেরা করেন। ফলে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ।

 

আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও পাবনা-২ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা কামরুজ্জামান উজ্জ্বল বাংলানিউজকে বলেন, গত সাড়ে তিন বছরে বর্তমান এমপি স্থানীয় নেতাকর্মী ও জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন। তার কর্মকাণ্ডের কারণে অনেক ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা আজ ঘরে আলস বসে আছেন। এসব নেতাকর্মীকে আগামী নির্বাচনে না ফেরাতে পারলে দল ভালো করবে না। তাই তাদের রাজনীতির মাঠে ফিরিয়ে আনতে হলে পরিবর্তন দরকার।

 

এ দিকে বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা স্পষ্ট ভাষায় বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান এমপির কর্মকাণ্ডের কারণে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। আর কোনোভাবে মনোনয়ন পেলেও তাকে জনগণ মেনে নেবে না। ফলে নির্বাচনে দল পাবনা-২ আসন হারাতে পারে।

 

সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মেদ ফিরোজ কবির আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। স্থানীয় রাজনীতিতে গ্রহণ যোগ্যতাও রয়েছে এই আওয়ামী লীগ নেতার। সাবেক এমপি তফিজ উদ্দিনের ছেলে হওয়াতেও স্থানীয় জনতার মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান এমপি দলের লোকদের বাদ দিয়ে নিজের কাছের লোক দিয়ে দল চালাতে চান। কিন্তু দলের ত্যাগী নেতারা যদি সম্মান না পান তাহলে তো আগামী নির্বাচনে ভালো করা যাবে না। এমপি স্থানীয় নেতাদের চরমভাবে হতাশ করছেন। তার এ সব  কর্মকাণ্ডের কারণে দল আজ স্থানীয়ভাবে অগোছালো। আগামী নির্বাচনে ভালো ফলাফল করতে হলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনতার ইচ্ছার প্রতিফল ঘটাতে হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন,  এমপি যেমন দল গোছাতে ব্যর্থ হয়েছেন, তেমনি স্থানীয় উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারেনি। রাস্তা-ঘাটের দশা বেহাল। সংস্কারের কোনো ভূমিকাই তিনি রাখতে পারেনি। সব কিছু বিবেচনায় আমার মনে হয় না, আগামী নির্বাচনে পাবনা-২ আসনের জনতা আওয়ামী লীগের এমন প্রার্থী চায়।  

 

তবে এমপির বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন এমপির কাছের লোক বলে পরিচিত সুজানগর পৌরসভার মেয়র মো. আব্দুল ওহাব।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এমপির কর্মকাণ্ডে দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনতা সন্তুষ্ট। আমরা আশা করি আগামী নির্বাচনেও বর্তমান এমপি দলীয় মনোনয়ন পাবেন।

 

স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা যায়, আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে আছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. সাঈদুর রহমান ও কৃষিলীগের সাবেক সভাপতি ড. মির্জা জলিল।

বাংলাদেশ  সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৭
এমএ/এএটি/জেডএম

‘সকলে যেন এক থালে ভাত খায়’
ত্রিমুখী কোন্দলে জর্জরিত নাটোর-১ আসনের আওয়ামী লীগ
‘আমরা যেন ভোট দিয়ে সরকার বানাতি পারি’
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।