ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

গোবিন্দগঞ্জে আ’লীগ-৪, বিএনপিও-৪

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
গোবিন্দগঞ্জে আ’লীগ-৪, বিএনপিও-৪ উপরে ছবির ডান দিক থেকে: আবুল কালাম আজাদ, মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, আতাউর রহমান, আবদুল লতিফ প্রধান। নিচে আব্দুল মান্নান মণ্ডল, শামীম কায়সার লিংকন, ফারুক কবির চৌধুরী ও আমিনুল ইসলাম

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমান সংখ্যক ‘সম্ভাব্য’ প্রার্থী রয়েছেন।
 

আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার এবং মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
 
`নতুন প্রজন্মকে নিয়ে মডেল গোবিন্দগঞ্জ গড়ে তুলবো’

অপরদিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান মণ্ডল, শামীম কায়সার লিংকন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্থানীয় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক কবীর আহম্মেদ এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


 
তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড় দুই দল থেকে এই ৮ জন মনোনয়ন চাইলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এবং বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান মণ্ডল।
 
দুই দল থেকে এই দুজন মনোনয়ন পেলে লড়াইটা হবে সেয়ানে সেয়ানে। এ দুই জনের যে কোনো একজন মনোনয়ন বঞ্চিত হলে লড়াই হবে একপেশে। বিএনপি থেকে আব্দুল মান্নান মণ্ডল না পেলে আবুল কালাম আজাদ অনায়াসে জিতে যাবেন। আবার আওয়ামী লীগ থেকে আবুল কালাম আজাদ না পেলে আব্দুল মান্নান অনায়াসে জিতে যাবেন বলে স্থানীয়দের ধারণা।

২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। দলের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। নৌকার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
 
ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক এই চেয়ার‌ম্যান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। তৃণমূল রাজনীতি থেকে উঠে আসা আবুল কালাম আজাদ আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
 
আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, বিগত দিনে জামায়াত-বিএনপির অপচেষ্টা রুখে দিয়ে গোবিন্দগঞ্জকে শান্তির জনপদে পরিণত করেছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সুখী-সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল দেশ গড়ার মিশন অব্যাহত রয়েছে সেখানেও ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। এসব বিষয় মাথায় রেখে নেত্রী আমাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আমার বিশ্বাস।
 
আবার স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই বলছেন, জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে সাবেক সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেন চৌধুরীও গোবিন্দগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার। কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনি কিছুটা এগিয়ে। তবে তৃণমূলে এগিয়ে থাকবেন আবুল কালাম আজাদ-ই।
 
এ আসনে আওয়ামী লীগের আরো দুই নতুন মুখ আতাউর রহমান সরকার ও আব্দুল লতিফ প্রধান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র হিসেবে আতাউর রহমান সরকারেরও জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্যদিকে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ প্রধান গত উপজেলা নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছেন।
 
আব্দুল লতিফ প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, আমি গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র কিনেছিলাম, এবারও কিনব। আশা করি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। আর যদি না দেয়, যাকে দেবে, তার পক্ষে কাজ করব।    

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুল মান্নান মণ্ডল-ই আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। সাবেক এই সংসদ সদস্য জনপ্রিয়তার দিক থেকে এগিয়ে আছেন। তাকে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী যেই হোক, তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
 
তবে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকনও এ আসনে বিএনপির শক্ত প্রার্থী। কিন্তু জনপ্রিয়তা ও জনসম্পৃক্ততার দিক থেকে তিনি আবদুল মান্নান মণ্ডলের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছেন বলেন জানান স্থানীয়রা।    
 
অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলামও মনোনয়ন দৌড়ে ভালই এগিয়ে আছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্নেহভাজন আমিনুল ইসলাম যদি দলীয় মনোনয়ন পেয়েই যান, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
 
ঢাকায় অবস্থানরত আমিনুল ইসলাম মোবাইলে বাংলানিউজকে জানান, গোবিন্দগঞ্জের ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা ও ভোট বেশি। এ বিষয়টি মাথায় রেখে দল তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি জিতে আসতে পারবেন।
 
বিএনপির আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক কবীর আহম্মেদও দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। আওয়ামী লীগের আমলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাচনে জিতে তার আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে।
 
তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোবিন্দগঞ্জে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ ও বিএনপির আব্দুল মান্নান মণ্ডল এর নৌকা-ধানের শীষ প্রতীকে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
এজেড/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।