ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

উল্লাপাড়ায় বিএনপির জন্য বড় ‘ফ্যাক্টর’ জামায়াত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
উল্লাপাড়ায় বিএনপির জন্য বড় ‘ফ্যাক্টর’ জামায়াত রফিকুল ইসলাম খান।

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) থেকে: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে বিএনপির জন্য বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে জোট শরিক জামায়াত। এ আসনে আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করার আগে রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতকে মোকাবেলা করতে হবে তাদের।

উল্লাপাড়ার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, বিগত নির্বাচনের ফলাফল এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। এ আসনে জামায়াত-বিএনপির মধ্যে মসঝোতা না হলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ‘জয়’ সহজ হয়ে যাবে বলে স্থানীয়দের ধারণা।


 
গোবিন্দগঞ্জে আ’লীগ-৪, বিএনপিও-৪

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা রফিকুল ইসলাম খান উল্লাপাড়া আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
 
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নির্বাচন করেন মওলানা রফিকুল ইসলাম খান। ওই নির্বাচনে ৯৭ হাজার ৪৬৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন তিনি। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম আকবর আলী মাত্র ২৪ হাজার ৪৬০ পেয়ে তৃতীয় হন।
 
উল্লাপাড়া জামায়াত নেতাদের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে জামায়াতের প্রার্থী হন অ্যাডভোকেট মওলানা আবু বকর সিদ্দিকী। সে বছর বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম আকবর আলী খানের কাছে মাত্র দেড় হাজার ভোটে পরাজিত হন জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিকী।
 
এ আসনে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও জামায়াতের প্রার্থী হন মওলানা আবু বকর সিদ্দিকী। সেবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল লতিফ মির্জার কাছে পরাজিত হলেও জামায়াত প্রার্থীর অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। আর যথারীতি বিএনপির অবস্থান ছিল তৃতীয়।
 
২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপির ঐক্য হওয়ায় উল্লাপাড়ায় প্রার্থী দেয়নি জামায়াত। ফলে ওই আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম আকবর আলী বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।
 
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় উল্লাপাড়া আসনে প্রথমবারের মতো জামায়াতের প্রার্থী হন তৎকালীন ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর মওলানা রফিকুল ইসলাম খান। আওয়ামী লীগের জয়জয়কার পরিস্থিতির মধ্যেও জামায়াতের এই প্রভাবশালী নেতা প্রায় ৯৮ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন।
 
অর্থাৎ ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পযর্ন্ত অনুষ্ঠিত চারটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক জাতীয় সংসদ নির্বানের মধ্যে ৩টিতে অংশ নেয় জামায়াত এবং এ তিনটি নির্বাচনেই জামায়াত প্রার্থীর অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।
 
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, উল্লাপাড়া আসনে জামায়াত দাঁড়ালেই বিএনপি তৃতীয় স্থানে চলে যায়। আর জামায়াতের সঙ্গে জোট করলে বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটে জিতে আসে।
 
স্থানীয়রা বলছেন, জামায়াত এককভাবে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হতে পারবে না। কিন্তু বিএনপির পরাজয় তরান্বিত করতে পারবে। এক্ষেত্রে সুবিধা হবে আওয়ামী লীগের।
 
জামায়াত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে উল্লাপাড়ায় নির্বাচন করবেন রফিকুল ইসলাম খান। জোট থেকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী বানানোর প্রস্তাব দিলেও সেটি প্রত্যাখান করে উল্লাহপাড়া আসনে নির্বাচন করবেন রফিকুল ইসলাম খান।
 
উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর ও উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহজাহান আলী বাংলানিউজকে বলেন, মওলানা রফিকুল ইসলাম খান এ আসনে নির্বাচন করবেন-আপাতত এটিই দলীয় সিদ্ধান্ত।
 
আমরা বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছি। যদি সমঝোতা হয় ভালো, না হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উল্লাপাড়া আসনে নির্বাচন করবেন মওলানা রফিকুল ইসলাম খান। আর জোটগতভাবে নির্বাচন হলেও ধানের শীষ প্রতীক নেবে না জামায়াত। স্বতন্ত্র প্রতীকেই নির্বাচন করবে তারা- জানান অধ্যাপক শাহজাহান আলী।
 
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, ওখানে জোটগতভাবে প্রার্থী দিতে হবে। জামায়াত-বিএনপির দু’জন প্রার্থী হলে ঝুঁকি থেকে যাবে। সিরাজগঞ্জের সব আসনে আমরা জিততে চাই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
এজেড/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।