ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

প্রচারণায় মিল্লাত, টুকুতে একাট্টা বিএনপি

জনি সাহা, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
প্রচারণায় মিল্লাত, টুকুতে একাট্টা বিএনপি ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নার ফেস্টুন- বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ-২ আসন ঘুরে: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সিরাজগঞ্জ-২ (সদর- কামারখন্দ) আসনে এরইমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এ আসনে দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে।

সদর-কামারখন্দ নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-২ আসনটিতে বর্তমানে প্রতিনিধিত্ব করছেন প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশারফ হোসেনের মেয়ের জামাতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ননদের স্বামী অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিত হন।

বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুন্না আসনটিতে এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে ভোটের মাঠে জোর গুঞ্জন রয়েছে।

এ আসনে বিএনপি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মনোনয়ন পাবেন বলে নেতাকর্মীদের বিশ্বাস। তবে ২০০৮ সালের মতো শেষ পর্যন্ত যদি তিনি নির্বাচনে না দাঁড়াতে পারেন তবে তার স্ত্রী জেলা বিএনপি সভাপতি রুমানা মাহমুদ মনোনয়ন চাইবেন বলেও মনে করছেন নেতাকর্মীরা।  

সিরাজগঞ্জ-২ আসনটি বতর্মানে আওয়ামী লীগের দখলে থাকলেও আগামী নির্বাচনে আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হবেন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। সব ধরনের কোন্দল দূরে ঠেলে টুকুতে তারা একাট্টা। তারা এও বলছেন, যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তবে এ আসনে টুকু ৮০ শতাংশ ভোট পাবেন।

নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার মোড়ে মোড়ে ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নার প্রচারণা সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন ঝুলছে। কড্ডার মোড় থেকে জামতৈল বাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে টানানো পোস্টারে এলাকার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেছেন মুন্না। যাতে তুলে ধরা হয়েছে শতভাগ বৈদ্যুতিক সংযোগ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি।

তবে এলাকাবাসী বলেন, বৈদ্যুতিক লাইন দিয়ে কি হবে? বিদ্যুৎই তো থাকে না। ঘণ্টার মধ্যে ১০-১২ বার লোডশেডিং হয়। কড্ডার মোড় থেকে জামতৈল বাজার যেতে সিএনজিচালিত অটোচালক নূরনবীও একই কথা বলেন।  

আর স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে দ্বন্দ্বের আভাস পাওয়া গেলো। যা আগামী নির্বাচনে দলটির ‘অস্বস্তির’ কারণ হতে পারে।  

তবে সেদিক থেকে মোটামুটি সক্রিয় ও সংগঠিত অবস্থায় রয়েছে সিরাজগঞ্জ-২ আসনকে নিজেদের ‘ঘাঁটি’ দাবি করা বিএনপি। রেলস্টেশনের পাশে দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত নেতাকর্মীদের পদচারণাও রয়েছে। আর ‘টুকু ভাই’ বলতেই সবাই একপ্রাণ।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়েস বাংলানিউজকে বলেন, টুকু ভাই নির্বাচনের মাঠে নামলে অন্য কেউ দাঁড়াতেই পারবে না। নির্বাচনে আমাদের জয় শতভাগ নিশ্চিত। দলের সাংগঠনিক অবস্থা আগের চেয়ে অবস্থা ভালো। অঙ্গসংগঠনগুলোও সক্রিয়।  

কামারখন্দ উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. হাসনাত রাব্বী সুমন বাংলানিউজকে বলেন, টুকু ভাই নির্বাচনে অংশ নিলে আমরা সকাল ১০টার মধ্যেই জয় নিয়ে ঘরে ফিরবো। এ আসনে বিএনপির জয় নিশ্চিত।

তবে ২০০৮ সালের মতো ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে ওই বছরের মতো এবারও তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদ নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে এলাকা ঘুরে জানা গেলো।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুমানা মাহমুদ বলেন, যেহেতু টুকু নির্বাচন করবেন, না পারলে সেক্ষেত্রে জনগণ ও কেন্দ্রের উপর বিষয়টি নির্ভর করবে।  

এ আসনে বিএনপি থেকে আরো মনোনয়ন চাইতে পারেন- দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সাবেক এমপি মির্জা মোরাদুজ্জামানের ছেলে মির্জা মোস্তফা জামান, কেন্দ্রীয় সদস্য মেজর (অব.) মোহাম্মদ হানিফ ও সাবেক পৌর মেয়র টি.এম নুর-এ আলম হেলাল।  

অন্যদিকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, বাসদের নব কুমার কর্মকার ও সিপিবির ইসমাইল হোসেন প্রার্থী হতে পারেন।  

নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়ে জানতে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। আর এ আসনের আর এক মনোনয়ন প্রত্যাশী ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী জান্নাত আরা তালুকদার হেনরীকে ফোন করলে ব্যস্ত আছেন বলে রেখে দেন।

এছাড়া আসনটিতে জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসানও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে গুঞ্জন আছে। তবে এ প্রসঙ্গে হাসানের বক্তব্য, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি তিনি।  

ফলে প্রতিনিয়ত পাল্টে যাওয়া ভোটের মাঠের চিত্র নিয়ে এখনই হলফ করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে লড়াইয়ের একটা আভাস পাওয়া গেছে। একদিকে বর্তমান সংসদ সদস্যের স্বচ্ছ ইমেজ, অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী টুকুর প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা এ লড়াই জমিয়ে তুলবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।  

** পানি আয়রনমুক্ত করতে বালু-কয়লা ‘থেরাপি’
** রায়গঞ্জের প্রার্থীতে সিরাজগঞ্জ-৩ এর ‘ভাগ্য
** 
নৌকার মাঝি হতে চান ডজনখানেক নেতা!
** চায়ের দোকানির নামে 'সাদেক চত্বর'!
** এমপি হলে সংসদ বাদে ঢাকায় অবস্থান
** চারদিকে বন্যা, তবুও জমজমাট ভরতখালী গরুর হাট
** গাইবান্ধা-৩ এ মনোনয়ন ‘বেকায়দায়’ আ’লীগ, বিএনপির সাদিক!
** পানিবন্দি জীবনেই অভ্যস্ত তারা!
** ছিপ জালে চলছে জীবিকা!
** ৫ টাকার ছানার সন্দেশে মুখ ভরা স্বাদ!
** রাজশাহী-১ এ প্রার্থী মানেই চৌধুরী-ব্যারিস্টার
** ‘বহিরাগতদের’ আসন পবা-মোহনপুর
** লুচির সঙ্গে ভাজি ফ্রি
** কর্মীদের জন্য কাজ করতে চান মানজাল
** পবা-মোহনপুরে এগিয়ে আয়েন, ‘ফ্যাক্টর’ মোল্লা!
** রাজশাহী জাপার কার্যালয়: খসছে পলেস্তারা, ঝুলছে মাকড়সা
** রেলস্টেশনে ‘কেবলমাত্র খাওয়ার পানির’ অপচয়!

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
জেডএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।