ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২, ১৩ মে ২০২৫, ১৫ জিলকদ ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

মালয়েশিয়ায় সাধারণ ক্ষমা

আনন্দে মাতোয়ারা বাংলাদেশিরা

আহ্সান কবীর, কান্ট্রি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৪৩, জুন ৬, ২০১১
আনন্দে মাতোয়ারা বাংলাদেশিরা

ঢাকা: মালয়েশিয়া সরকার সেদেশে বসবাসরত প্রায় ২০ লাখ অবৈধ অভিবাসীর একটি বৃহৎ অংশকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে যাচ্ছে। আগামী মাস থেকে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী একটি ইংরেজি দৈনিক।



এ সংবাদ মালয়েশিয়া প্রবাসী কয়েক লাখ অবৈধ অভিবাসীর জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। রোববার সকালে পত্রিকার পাতায় খবরটি পড়ার পর কুয়ালালামপুর, পেনাংসহ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিরা এখন অনেকটাই আনন্দে ভাসছেন।  

অপরদিকে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করে মালয়েশিয়া সরকার চাইছে তার দেশে বিদেশিদের দ্বারা ঘটা দৈনিক অপরাধের হার কমিয়ে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে।

উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৭ লাখ বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ লাখই অবৈধ শ্রমিক।

৩সপ্তাহের এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ৬পি (৬চ) অর্থাৎ নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন), বৈধকরণ (লিগালাইজেশন), সাধারণ ক্ষমা (অ্যামনেস্টি), তদারকি (সুপারভিশন), বাস্তবায়ন (এনফোর্সমেন্ট) ও নিজদেশে ফেরত (ডিপোর্টেশন)। অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা কমানোর ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এযাবৎ নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে ‘সিক্স পি’কে বলা হচ্ছে সবচেয়ে সমন্বিত ও কার্যকরী পদক্ষেপ।

মালয়েশীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সরকারের দেওয়া এ সুযোগ গ্রহণে অবৈধ অভিবাসীরা ৩ সপ্তাহ সময় পাবেন। এরপরে কাজের বৈধ পারমিট ছাড়া অথবা বৈধ ভ্রমণ-সনদ ছাড়া কেউ ধরা পড়লে কঠোর আইনি বিধানের মুখোমুখি হতে হবে।  

উল্লেখ্য, আগে নেওয়া এ ধরনের বিভিন্ন পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য ছিল অবৈধ অভিবাসীদের জোর করে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। তবে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা চলতি বছরে এর আগেও একবার করা হয়েছিল। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিকবার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য। তবে সিক্স পি নামে এবারকার নেওয়া উদ্যোগটি অবৈধ অভিবাসীদের স্বার্থের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ইতিবাচক হবে বলে জানিয়েছেন বাংলানিউজের মালয়েশিয়া প্রতিনিধি কায়সার হামিদ হান্নান।

তিনি জানান, সাধারণ ক্ষমার আওতায় প্রথমে অবৈধ অভিবাসীদের তালিকাভুক্ত করা হবে। তারপর তাদের ছবি ও আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) এবং বর্তমানে যে মালিকের বা নিয়োগকর্তার অধীনে কর্মরত তার অনুমোদনপত্র নথিভুক্ত করা হবে। এরপর অবৈধ এই শ্রমিকদের বৈধতার সনদ বা ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে।
 
একাজে সরকারকে সহায়তা দেবে ফরেন ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার ম্যানেজমেন্ট সেন্টার। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান দাতু ইসমাইল বিন আলহাজ আব্দুর রহিম ডিপার্টমেন্ট অব লেবার মালয়েশিয়ার সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার উদ্যোগকে সামনে রেখে এ প্রতিষ্ঠানটি গত এক বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে যাচ্ছে।

ফরেন ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার ম্যানেজমেন্ট সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ও শ্রম মন্ত্রণালয় কর্তৃক সমর্থিত একমাত্র সংগঠন যা বিদেশি শ্রমিকদের কল্যাণে নেয়াজিত। এ প্রতিষ্ঠানের কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস তাউসুম ও কায়সার হামিদ হান্নান নামে দু’জন প্রবাসী বাংলাদেশি। তারা বাংলানিউজকে জানান, অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রকল্প শুরু হলে বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, ০৬ জুন, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।