ঢাকা: স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারে শীর্ষস্থান বজায় রাখার পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানী ‘ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’।
সেই লক্ষ্য পূরণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার মো. জিয়াউল আলম বলেন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটনের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, দক্ষ জনবল এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। তাই প্রতিভাবান, উদ্যোগী ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ প্রজন্মকে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়েছেন উদ্যোক্তা পরিচালকরা। তারই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটনের উদ্যোক্তা পরিচালকরা যথাযথ নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে নতুন প্রজন্মের কাছে উপহার হিসেবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার হস্তান্তর করেছেন। এতে করে একদিকে পুঁজিবাজারে ওয়ালটনের ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের সংখ্যা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশিত ১০ শতাংশের বেশি হয়েছে। অন্যদিকে ওয়ালটনকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্র্যান্ডে পরিণত করার অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব প্রদান করার জন্য তরুণ প্রজন্মের অন্তর্ভুক্তি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মুনাফা অর্জনই ওয়ালটনের একমাত্র লক্ষ্য নয়। বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স খাতের দ্রুত বিকাশ, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষ জনবল তৈরি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সর্বোপরি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে ওয়ালটন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫’ এ ইএসজি (এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল অ্যান্ড গভর্ন্যান্স) ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ওয়ালটনকে ‘এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ পুরস্কার দেন প্রধান উপদেষ্টা, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস।
এ ছাড়াও কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক হিসাবরক্ষণ নীতি এবং দেশীয় সব আইন মেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে ওয়ালটন। তারই স্বীকৃতি হিসেবে বিগত বছরগুলোতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর্পোরেট গভর্ন্যান্স এক্সিলেন্স, বেস্ট প্রেজেন্টেড বার্ষিক প্রতিবেদন পুরস্কার পেয়ে আসছে ওয়ালটন।
বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের পুঁজিবাজারে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করায় ওয়ালটনসহ প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটন হাই-টেকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার ফলে সৃষ্ট পুঁজিবাজারে নিম্নমুখী ধারা এখনো বিদ্যমান, এর ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অন্যান্য বড় কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি ওয়ালটন হাই-টেকের শেয়ারও ব্যাপক মূল্য হারিয়েছে। তবে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত টাস্কফোর্সের নানা রকম সুপারিশ এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপসমূহ ভবিষ্যতে দেশের পুঁজিবাজারকে আবারও চাঙ্গা করে তুলবে।
তিনি আরও জানান, শুরুতে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনারসহ অল্প কয়েকটি প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করত ওয়ালটন। কিন্তু আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনী খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রোডাক্ট লাইনে লিফট, ক্যাবলস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সসহ নতুন নতুন পণ্য ও মডেল যুক্ত হয়ে ওয়ালটনের প্রোডাক্ট পোর্টফোলিও বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে। এর ফলে বেড়েছে কোম্পানির ব্যবসায়িক পরিধি ও বার্ষিক টার্নওভার।
আগামীর সাফল্য কামনায়, ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে ওয়ালটন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হতে হবে, ওয়ালটন তা মোকাবিলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ, তরুণ ও নারীদের ক্ষমতায়ন, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং টেকসই, দায়িত্বশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য ওয়ালনের প্রচেষ্টা সর্বদা অব্যহত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৫
এএটি