ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

‘অনীহা’র সাদা পোশাকেই বেশি মানায় সাকিবকে!

মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (স্পোর্টস) | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২২
‘অনীহা’র সাদা পোশাকেই বেশি মানায় সাকিবকে!

চট্টগ্রাম থেকে: ভারতের অনুশীলন তখন প্রায় শেষদিকে। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এসেছেন কেবল।

টেস্ট সিরিজের ট্রফি উন্মোচনের জন্য দুই অধিনায়কের জন্য রাখা হয়েছে প্রেসিডেন্ট বক্সের সামনে। ছবি তোলার জন্য তৈরি ক্যামেরাও। নুরুল হাসান সোহান তখন প্যাড নিয়ে যাচ্ছেন নেটে। এমন সময় এলেন সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত মানুষটি।

সাকিব আল হাসানকে দেখেই সোহান বললেন, ‘আমি অনেকবারই বলেছি। সাদা পোশাকেই আপনাকে সবচেয়ে বেশি মানায়। একদম ফকফকে। ’ সাকিব পেছন ফিরে মুচকি হাসি দিয়ে চললেন ছবি তুলতে। কথাটা উইকেটরক্ষক ব্যাটার বলেছেন হয়তো দুষ্টামির স্বরেই। তবুও সাকিবকে সাদা পোশাকে লাগছিল বেশ সুন্দর। শোনা যায়, তার অনীহাও নাকি এই পোশাক গায়ে দিতে!

একটু পর সাকিব গিয়েছেন ট্রফি উন্মোচন করতে। সেখানেও মেতেছেন রসিকতায়। রোহিত শর্মার চোটে অধিনায়কত্ব পাওয়া লোকেশ রাহুলের মাথায় ক্যাপ ছিল, সাকিকের ছিল না। ছবি তোলার আগে তিনি বললেন ‘আমার তো ক্যাপ নেই!’ না থাকলেও ছবি ঠিকঠাকভাবেই তুলতে পারলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।

এসব রসিকতা অবশ্য মাঠে করার খুব বেশি সুযোগ নেই। অনুশীলনেও দেখা গেল তার ছাপ। ভারতের বিপক্ষে ১১ টেস্ট খেলে কোনো জয় নেই। পরিসংখ্যান বদলাতে মরিয়া ভাব থাকবে, বোঝা গেল স্পষ্ট। স্কোয়াডে না থেকেও চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে, এসেছেন অফ স্পিনার রাকিবুল হাসানও।

‘এ’ দলের দায়িত্ব শেষে এদিন অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। শিষ্যদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। নেট বোলারদের বারবার বলছিলেন বিভিন্ন ধরনের বল করতে। সতীর্থদের সিরিয়াসনেসের দিনে সাকিব অবশ্য ছিলেন আড়ালে। টেস্টের জার্সি গায়ে ফটোসেশন করা ছাড়া অনুশীলন অথবা কোথাও ক্যামেরায় অন্তত ধরা পড়েননি।

ফিল্ডিং অনুশীলনে ব্যস্ততার বেশির ভাগই ছিল এবাদত হোসেনকে ঘিরে। নিয়মিত ক্যাচ ফেলা এই পেসার উন্নতিতে বেশ মরিয়া ভাবই দেখালেন অনুশীলনে। তবে তার আসল দায়িত্ব বোলিংটা ঠিকঠাক করা জরুরি চট্টগ্রামের ব্যাটিং উইকেটে। তার সতীর্থ তাসকিন আহমেদ জানালেন, তাদের লক্ষ্য পঞ্চম দিনে খেলা নিয়ে যাওয়া।

সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলছিলেন, ‘যতগুলো টেস্ট জিতেছি আমরা দেখে গেছে পঞ্চম দিনে খেলা নিয়ে গেছি। এখানে লক্ষ্য থাকবে যত ভালো উইকেট থাকুক পঞ্চম দিনে যেতে পারলে ভালো কিছু প্রত্যাশা করা যায়। ’

বাংলাদেশের আগেই অনুশীলনে হাজির হয়েছিলেন বিরাট কোহলি। দুবার নেট বদলে তিনি বেশির ভাগ সময়ই ব্যাট করেছেন পেসারদের বিরুদ্ধে। মাঝে রাহুল দ্রাবিড় ও পরে তিনি কথা বলেছেন ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাথুরের সঙ্গে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির ফর্মটা সাদা পোশাকে আনতে চান কোহলি।  

সেটি ভারতের জন্য ভীষণ জরুরি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় দরকার তাদের। একথা বলছিলেন টেস্ট অধিনায়ক রাহুলও, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ উতরে যাওয়ার ব্যাপার আছে আমাদের। আমাদেরও আগ্রাসী হতে হবে। আমরা জানি, আমাদের অবস্থান কোথায়, ফাইনালে যেতে কী করতে হবে। যেমনটি বললাম, নির্দিষ্ট দিনে সবকিছু বিবেচনা করব। এটা টেস্ট ক্রিকেট—প্রতিটি দিন, প্রতিটি সেশনে দলের চাহিদা বিবেচনা করতে হবে। নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করে উপভোগ করতে হবে। ’

বাংলাদেশ দল অনুশীলন করেছে শেষ বিকেলের প্রায় পুরোটা সময়ই। সব শেষে ছোট একটা জটলাও পাকিয়েছিলেন কোচিং স্টাফের সদস্যরা। ভারতকে আটকানোর কৌশল নিশ্চয়ই আগে থেকেই বাতলাতে শুরু করেছেন তারা। করাচ্ছেন অনুশীলনও। তবে তাসকিনের ভাষায় ‘পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে হবে ক্রিকেটারদেরই। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২২
এমএইচবি/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।